নেপালের জোট সরকারের বৃহত্তম দল তাদের সমর্থন প্রত্যাহারের পর সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার আস্থা ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এর ফলে, ১৯ মাস ক্ষমতায় থাকার পর তিনি এখন মসনদ ছাড়তে বাধ্য হবেন।
ভোটে জেতার জন্য সংসদের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভে’র অর্ধেকের বেশি সদস্যের সমর্থন দরকার ছিল, কিন্তু পুশপা কমল দাহাল সেটা পেতে ব্যর্থ হন।
সংসদের স্পিকার দেব রাজ ঘিমিরে ঘোষণা করেন, দাহাল মাত্র ৬৩টি ভোট পেয়েছেন এবং ১৯৪ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তাই, তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হন যা ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রয়োজনীয়।
নেপালের সরকারে দাহালের প্রধান মিত্র কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট) গত সপ্তাহে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নতুন জোট গঠনের জন্য সে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, দাহাল সংসদে আস্থা ভোটের আয়োজন করতে বাধ্য হয় ।
জোট সম্মত হয়েছে যে, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা খড়্গ প্রসাদ ওলি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন।
দাহাল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নড়বড়ে জোট সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। ওই বছর নেপালের জাতীয় নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে ছিল দাহালের দল। তবে, তিনি নতুন জোট গঠন করে তার নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
জোট শরিকদের মধ্যে মতানৈক্যের কারণে নেতা হওয়ার পর দাহালকে সংসদে পাঁচবার আস্থা ভোট আয়োজন করতে হয়েছে।
তার মাওবাদী গোষ্ঠী ২০০৬ সালে সশস্ত্র বিপ্লব থামিয়ে মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই দেশে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দাহাল। এটি ছিল তার তৃতীয় দফা।
দাহাল, যিনি প্রচান্ডা নামেও পরিচিত, ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সালে সহিংস মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই অস্থিরতায় ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং বাকি অনেকের অবস্থা এখনও অজ্ঞাত।