নেপালে ৫০ যাত্রী নিয়ে দুটি বাস ত্রিশূলী নদীতে ভেসে গেছে

নেপালের পুলিশ বাহিনীর সরবরাহ করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সিমালতালের কাছে নদীতে উদ্ধারকারীরা ডুবে যাওয়া বাস এবং যাত্রীদের খোঁজ করছেন। ফটোঃ ১২ জুলাই, ২০২৪।

মধ্য নেপালে এক ভূমিধ্বসের ফলে ৫০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে দুটি বাস শুক্রবার এক নদীতে ভেসে গেছে। অবিরাম বৃষ্টি এবং আরও ভূমিধ্বসের ফলে উদ্ধার কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনজন যাত্রী সাঁতার কেটে তীরে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, কিন্তু সকালের পরের দিকেও উদ্ধারকারীরা বাস দুটোর কোন হদিশ পায় নি। ধারনা করা হচ্ছে বাস দুটো ত্রিশূলী নদীতে ডুবে গিয়ে স্রোতে ভেসে গেছে।

নেপাল পাহাড়ি ভূখণ্ড হবার কারণে নদীগুলো বেশ খরস্রোতা হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে ভারি বৃষ্টিপাতে নদী-নালা ফুলে উঠেছে। পানি ঘোলাটে হয়ে যাবার ফলেও বাস খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাবি লামিচ্ছানে সংসদে বলেন, ৫১জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে এবং উদ্ধার কাজে ৫০০ জনেরও বেশি কর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছে।

দেশের অন্যান্য জেলায় ভূমিধ্বসের কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭জন মারা গেছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন।

বাস দুটো ভোর ৩টায় নদীতে ভেসে যাবার আগে রাজধানী কাঠমান্ডুর সাথে নেপালের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে যাওয়া মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনা ঘটে কাঠমুন্ডু থেকে ১২০ কিলোমিটার পশ্চিমে সিমালতালের কাছে।

নেপালের পোখারা শহরের কাছে ভূমিধ্বসে বিধ্বস্ত একটি বাড়ি। ফটোঃ ১২ জুলাই, ২০২৪।

সরকারি কর্মকর্তা খিমা নানাদা ভুসাল বলেন, এলাকায় যাবার রাস্তার কয়েকটি স্থান আরও ভূমিধ্বসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। উদ্ধার কাজে সহায়তা করার জন্য অতিরিক্ত জরুরী কর্মী আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ আর সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাবারের নৌকা ব্যবহার করে খোঁজ করছে। চিতওয়ান জেলা পুলিশ থেকে জানানো হয়, উদ্ধার কাজে যোগ দেয়ার জন্য ডুবুরি পাঠানো হয়েছে।

তিনজন জীবিত হাসপাতালে

ভুসাল বলেন, যে তিন জনকে জীবিত পাওয়া গেছে, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, তারা বাস থেকে লাফ দিয়ে নেমে সাঁতার কেটে তীরে আসেন। স্থানীয়রা তাদের খুঁজে পান এবং কাছের এক হাসপাতালে নিয়ে যান।

শুক্রবার সকালে একই মহাসড়কে তৃতীয় একটি বাস ভূমিধ্বসের কবলে পরে। ভুসাল বলেন বাসের ড্রাইভার মারা যান, তবে অন্য কেউ হতাহত হয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার নয়।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুশপা কামাল দাহাল বলেন তিনি খবর পেয়ে ব্যথিত হয়েছেন। তিনি সাম্প্রতিক বন্যা আর ভূমিধ্বস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, সরকারের কয়েকটি বিভাগ উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছে।

বর্ষা মৌসুমে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেপালে ভারি বৃষ্টিপাত হয়, যার ফলে হিমালয়ের এই পাহাড়ি দেশে প্রায়ই ভূমিধ্বস ঘটে।

বৃহস্পতিবার রাতে পর্যটন শহর পোখারার কাছে ভূমিধ্বসে এক পরিবারের সাতজন মারা যায়। পরিবার যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন ভূমিধ্বস তাদের কুঁড়েঘর ধ্বংস করে দেয়, এবং কাছের আরও তিনটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব এলাকায় খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া আছে, সেখানে রাতে বাস চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে।