বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, ‘ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ’ চুক্তি বাংলাদেশ ও ইইউ-এর মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক। “কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন দৃঢ়ভাবে মানবাধিকার, মর্যাদা ও সংহতির নীতিতে বিশ্বাস করে;” হোয়াইটলি আরো বলেন।
সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে, এক চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন চার্লস হোয়াইটলি।
“ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ উইথ বাংলাদেশ নামে সই করা চুক্তিটি অভিবাসী ও তাদের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত করবে;” যোগ করেন রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি। তিনি বলেন, এই অংশীদারিত্ব সার্বিক অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নত ও শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া অনিয়মিত অভিবাসন কমানোসহ ইইউর বাইরের গন্তব্যের দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতায় বাংলাদেশের সক্ষমতা জোরদার করবে।
হোয়াইটলি বলেন, ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক। এটি উভয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রচেষ্টাকে টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ত্বরান্বিত করবে এবং ইউরোপের শ্রমবাজারের চাহিদা মেটাবে।
বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আইসিটি, নার্সিং ও কেয়ার গিভিং, আতিথেয়তা ও পর্যটন, নির্মাণ, পরিবহন ও সরবরাহ, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণ এবং আরো কিছু খাতে ইইউ সদস্য দেশগুলোতে দক্ষ জনশক্তি সরবরাহের বিপুল সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসী যে ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্প বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এবং কেবল ইইউ সদস্য দেশগুলোর জন্যই নয়, বিশ্ববাজারের জন্যও শ্রমিকদের কর্মসংস্থান এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করবে।”
ইইউ রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব সবার জন্য ইতিবাচক ও দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন বয়ে আনবে। তিনি বলেন, “নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও ভালো ব্যবস্থাপনার অভিবাসন নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি এর আগে কখনো এত জোরালো ছিল না।”
“ইউরোপীয় ইউনিয়ন দৃঢ়ভাবে মানবাধিকার, মর্যাদা ও সংহতির নীতিতে বিশ্বাস করে;” হোয়াইটলি বলেন। তিনি আরো বলেন, “এটি স্বীকৃত যে অভিবাসন একটি পছন্দের বিষয় হওয়া উচিত, হতাশার নয়।”
ইউরোপীয় কমিশন বর্তমানে পাঁচটি দেশের সঙ্গে প্রতিভা অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে। দেশগুলো হলো; মিশর, মরক্কো, তিউনিসিয়া, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রতিভা অংশীদারিত্বে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত হোয়াইটলি বলেন, এই অংশীদারিত্ব প্রত্যাবাসন নীতি ও চোরাচালান বিরোধী প্রচেষ্টা-সহ অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা জোরদার করে, সার্বিক সহযোগিতা বাড়ায়। “ইউরোপের ভবিষ্যতের জন্য বৈধ অভিবাসনকে উৎসাহিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা ও কৃষির মতো মূল খাতগুলোতে সঙ্কুচিত কর্মশক্তি এবং দক্ষতার ঘাটতির মধ্যে এটা জরুরি;” যোগ করেন হোয়াইটলি।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ৩০ লাখ ইউরোর 'সাপোর্টিং এ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ উইথ বাংলাদেশ' কর্মসূচিটি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পারস্পরিক লাভজনক, নিয়মিত ও নিরাপদ যাতায়াতের পথ প্রশস্ত করে। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বৈধ শ্রম অভিবাসন উৎসাহিত করবে এবং অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধ ও কমাতে ভূমিকা রাখবে।