বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের প্রত্যাশা করে এবং তাদের জন্য আরো ভালো সুযোগের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।
প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে ফ্রান্স। রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই বলেন, তার দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে শরণার্থী শিবিরে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়টি মোকাবেলার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা এবং গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা পরিষেবা প্রদানে ইউএনএইচসিআর’র প্রচেষ্টায় সহায়তা জন্য, ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ লাখ ইউরো (১৬ লাখ ডলারের সমতুল্য) অনুদান দেয়া হয়েছে। ফ্রান্সের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
ফ্রান্স রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংকটের প্রতি সাড়াদানের দৃঢ় সমর্থক। বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি সুমবুল রিজভী বলেন, এই উদার সহায়তা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ মানবিক ও সুরক্ষা প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করবে।
তিনি আরো বলেন, “এটি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে, কক্সবাজারের পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র-কে সফল পুনর্বাসনের মাধ্যমে জলবায়ু ও শরণার্থী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামনের সারিতে থাকা স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করবে।”
ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার (২ জুলাই) বলেছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী ২০১৭ সালে তাদের আগমনের পর থেকে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ফ্রান্সের এই অনুদান দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শরণার্থীদের সহনশীলতা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।
যেহেতু ফ্রান্স আবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে; তাই, ইউএনএইচসিআর আশা করছে যে মানবিক তহবিল ঘাটতির সময়ে এই অনুদান অন্যান্য দাতাদের উৎসাহ যোগাতে কাজ করবে।
চলতি বছরে মানবিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের বাংলাদেশিসহ প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে সহায়তার জন্য ৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি সহায়তার আবেদন করেছিলো ইউএনএইচসিআর। বছরের মাঝামাঝি সময়ে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে ৩০ শতাংশের কম অর্থায়ন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াতে এবং বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ কমাতে, গত বছর গ্লোবাল রিফিউজি ফোরাম-এর সহ-আহবায়ক ফ্রান্স এবং অন্য সদস্যরা যে অঙ্গীকার করেছিলো, তা পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ইউএনএইচসিআর।