যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আরব মধ্যস্থতাকারীরা ইসরায়েল এবং লেবাননের ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান আন্তঃসীমান্ত হামলা কমাতে চাপ দিচ্ছে, যাতে তা ছড়িয়ে পরে মধ্য প্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত না হয়।
শনিবার ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরকে হুমকি প্রদান করে। ইরান বলেছে এটি হিজবুল্লাহকে ঘিরে এক “বিধ্বংসী” যুদ্ধ হবে।
গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির আশা, যেটা হিজবুল্লাহ ও ইরান-মিত্র অন্যান্য মিলিশিয়াদের হামলা শান্ত করতে পারে, এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
থমকে থাকা আলোচনার কথা মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কূটনীতিক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা সতর্ক করছেন হিজবুল্লাহকে, যারা হামাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী।
কূটনীতিকরা মনে করছেন, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সামরিক শক্তি সামাল দেবার ব্যাপারে অতিরিক্তরকম আত্মবিশ্বাসী।
আমেরিকা ও ইউরোপ তাদের সতর্ক করে বলেছে, যদি ইসরায়েলি নেতারা লেবাননে আক্রমণের জন্য যুদ্ধ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ইসরায়েলকে থামানোর জন্য হিযবুল্লাহ যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কারোর পর নির্ভর করতে পারবে না।
এর পর কী হবে, তা সামাল দেয়ার জন্য হিজবুল্লাহর তার যোদ্ধাদের সামর্থ্যের উপর নির্ভর করা উচিত হবে না বলেও মনে করেন তারা।
লেবানন সীমান্তের উভয় পাশে, ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে ক্রমবর্ধমান হামলা অন্তত এই সপ্তাহে হ্রাস পেয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক জেরাল্ড ফিয়ারস্টেইন বলেন, নিশ্চিতভাবেই মনে হচ্ছে ইসরায়েলিরা এখনো বড় ধরনের সংঘাত হতে যাচ্ছে এমনভাবেই নিজেদের প্রস্তুতি নিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলা চালিয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে। ইসরায়েলও পাল্টা আঘাত হেনেছে এবং সহিংসতার কারণে দুই দেশের হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক সীমান্ত ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
চলতি মাসে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ কমান্ডার হত্যা করলে হিজবুল্লাহ কয়েকটি বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যারেজ দিয়ে জবাব দেয় ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস যুদ্ধের পরিণতি “সর্বনাশা” হবে বলে মনে করছেন।
সম্প্রতি পেন্টাগনে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, এ ধরনের যুদ্ধ লেবাননের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।
“ইসরায়েল এবং হিযবুল্লাহ’র মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ সহজেই আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণীত হতে পারে, যা মধ্য প্রাচ্যের জন্য ভয়াবহ ফল নিয়ে আসবে,” তিনি বলেন।
জবাবে গ্যালান্ট বলেন, “আমরা একটি সমঝাতায় পৌঁছানোর জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছি, তবে সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতু থাকার বিষয় নিয়েও আমাদের আলাপ করতে হবে।”