সৌদি স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, হজের সময় তীব্র গরমে এ'বছর অন্তত ১,৩০০ মানুষ মারা গেছেন

সৌদি আরবে জাবাল আল-রাহমা পর্বতে হ্জযাত্রীরা ছাতা দিয়ে সূর্যের তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করছেন। ফটোঃ ১5 জুন, ২০২৪।

সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রবিবার বলেছে, এ বছর হজের সময় তীব্র গরমে এক হাজার তিনশ’র বেশি মানুষ মারা গেছে।

রাষ্ট্রীয়-মালিকানাধীন টেলিভিশনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহদ বিন আব্দুররাহমান আল-জালাজেল বলেন, মৃতদের ৮৩ শতাংশ ছিলেন অনুনুমদিত, যারা তীব্র গরমের মধ্যে অনেক দূর পথ হেঁটেছেন।

হজযাত্রীরা মরুভূমির এই রাজতন্ত্রের পবিত্র ইসলামী স্থানগুলোতে চরম পর্যায়ের উষ্ণ তাপমাত্রার মুখোমুখি হন।

এর আগে, কায়রোর দুই কর্মকর্তা জানান, মৃতদের অর্ধেকেরও বেশি মিসর থেকে এসেছিলেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অননুমোদিত হজযাত্রীদের সৌদি আরব ভ্রমণ করার সুযোগ করে দেওয়ার জেরে ইতোমধ্যে মিসর ১৬টি ট্র্যাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করেছে।

প্রতিটি মুসলিমের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ পালন আবশ্যক। সৌদি আরব এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হজযাত্রীর মৃত্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মিশর সরকার ৩১ জন অনুমোদিত হজযাত্রীর মৃত্যুর ঘোষণা দিয়েছে। কারণ হিসেবে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তের কথা বলা হয়েছে। তবে অন্যান্য হজযাত্রীদের মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক কারণ জানায়নি মিসর সরকার।

তবে মন্ত্রিসভার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আরও অন্তত ৬৩০ জন মিসরীয় হজের সময় মারা গেছেন। সংখ্যাটি নিশ্চিত করে অপর এক মিসরীয় কূটনীতিবিদ বলেন, মৃতদের বেশিরভাগকেই সৌদি আরবে কবর দেয়া হয়েছে।

সৌদি আরবে পবিত্র শহর মক্কার কাছে মিনায় হজযাত্রীরা সূর্যের তাপ থেকে রক্ষার জন্য ছাতা খুলে হাঁটছেন। ফটোঃ ১৮ জুন, ২০২৪।

সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেওয়ার অনুমোদন না থাকায় কর্মকর্তারা নাম না প্রকাশের শর্তে কথা বলেন।

এপি’র হিসাব মতে, মৃতদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ১৬৫, ভারতের ৯৮ এবং জর্ডান, তিউনিসিয়া, মরক্কো, আলজেরিয়া ও মালয়েশিয়ার কয়েক ডজন করে হজযাত্রী রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা দুই হজযাত্রীর মৃত্যুর কথাও জানানো হয়েছে।

হজের সময় মৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। পাঁচ দিনের হজযাত্রায় অংশ নিতে কখনো কখনো বিশ লাখেরও বেশি মানুষ সৌদি আরবে ভ্রমণ করেছেন। অতীতে অসংখ্য মানুষ হজ করতে এসে পদদলিত হয়ে ও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

তবে ব্যতিক্রমধর্মী পরিস্থিতির কারণে এ বছরের মৃতের সংখ্যা অস্বাভাবিক বলে অনুমিত।

মক্কা ও শহরটির আশেপাশের পবিত্র অবস্থানগুলোতে এ বছরের হজের সময় দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৬ থেকে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের জলবায়ু বিভাগ।