বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,“ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার।”
শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দেয়া যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উভয় পক্ষ তাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য পরস্পরকে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। “আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি;” আরো বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, “আজ আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে, যেখানে আমরা রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও যোগাযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।”
“যেহেতু ঢাকা ও দিল্লি নতুন যাত্রা শুরু করেছে; তাই, উভয় দেশ রূপকল্প ২০৪১ ও বিকশিত ভারত ২০৪৭ অনুসরণ করে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে;” যোগ করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা জানান, তারা সমঝোতা স্মারক সম্পাদন করেছেন, বেশ কয়েকটি নবায়ন করেছেন এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার জন্য ঘোষণা দিয়েছেন। “উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের দিকনির্দেশনা দিতে 'ভিশন স্টেটমেন্ট' সমর্থন করেছে;” আরো জানান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত 'ডিজিটাল পার্টনারশিপ' এবং 'টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সবুজ অংশীদারিত্ব' এর জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এ বছরের জানুয়ারিতে তার নতুন সরকার গঠনের পর এটি তার প্রথম কোনো দেশে দ্বিপক্ষীয় সফর। তিনি বলেন, “ভারত আমাদের প্রধান প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় জন্ম নেয়া ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত মূল্য দেয়।”
এ মাসের শুরুতে (৯ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে, অন্যান্য বিশ্ব নেতার সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি একই মাসে (জুন ২০২৪) নজিরবিহীনভাবে দ্বিতীয়বারের জন্য নয়া দিল্লি সফর করছি।”
তিনি আরো বলেন, সেই সফর দুই দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রমাণ। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রতিনিয়ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা জানান তিনি মোদীকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ই-মেডিকেল ভিসা চালু করবে ভারত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, বাংলাদেশিদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা চালু করবে ভারত।ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে রংপুরে একটি নতুন সহকারী হাইকমিশন খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘আমি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচের জন্য উভয় দলকে শুভকামনা জানাই… বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই…।”
শনিবার (২২ জুন) নয়া দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।