পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে পাঁচ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) নৌবাহিনীর একটি পরমাণুশক্তি চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী সাবমেরিন দেখা যাচ্ছে। ফাইল ফটোঃ ১২ এপ্রিল, ২০১৮।

পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথমবার গত মার্চ মাসে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আধা-সরকারি বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বেইজিং-এর প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বলেছেন, তারা তাইওয়ানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবেন না। এই বৈঠকে যোগ দেওয়া দুই আমেরিকান প্রতিনিধি এমনটাই জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সংঘাতে পরাস্ত হলে চীন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বা ব্যবহারের হুমকি দিতে পারে। তবে, চীনের প্রতিনিধিরা তাদের এ বিষয়ে পুনরায় আশ্বস্ত করেছেন যে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না। গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করছে চীন। কিন্তু তাইপেই সরকার চীনের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে।

‘ট্র্যাক টু টকস’-এর যুক্তরাষ্ট্রীয় আয়োজক স্কলার ডেভিড সানতোরো বলেন, “তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষকে বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করেই চীন বাহিনী তাইওয়ানের বিরুদ্ধে প্রচলিত লড়াইয়ে জয়লাভ করতে সক্ষম।”

'ট্র্যাক টু' বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত সাবেক কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদ যারা তাদের সরকারের অবস্থান ও পক্ষ থেকে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে পারেন; এই বৈঠকে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও। সরকারের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা ‘ট্র্যাক ওয়ান’ নামে পরিচিত।

শাংহাই হোটেলের সম্মেলন কক্ষে দুই দিনের এই আলোচনা সভায় ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ছয়জন প্রতিনিধি যাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক কর্মকর্তা ও গবেষক।

বেইজিং গবেষক ও বিশ্লেষকদের একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল, যাদের মধ্যে ছিলেন পিপল’স লিবারেশন আর্মির কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ট্র্যাক টু আলোচনা “লাভজনক” হতে পারে। এই মন্ত্রক মার্চের বৈঠকে যোগ না দিলেও এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল বলে জানিয়েছেন এই মুখপাত্র।

চীনের প্রতিনিধিদল ও বেইজিং-এর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে তারা কোনও প্রত্যুত্তর দেয়নি।

পেন্টাগনের অনুমান, ২০২১ ও ২০২৩ সালের মধ্যে চীন ২০ শতাংশের বেশি পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি করেছে। গত বছর অক্টোবর মাসে পেন্টাগন বলেছিল, “তাইওয়ানে প্রচলিত সামরিক পরাজয় সিসিপি শাসনকে হুমকির মুখে ফেললে, ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করবে” চীন।

তাইওয়ানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চীন কখনই শক্তি প্রয়োগ ত্যাগ করেনি এবং এই দ্বীপের চারধারে গত চার বছর ধরে সামরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করেছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা বনি জেনকিন্স মে মাসে কংগ্রেসকে বলেছিলেন, গত বছরের আনুষ্ঠানিক বৈঠক চলাকালে ওয়াশিংটন পরমাণু অস্ত্রের ঝুঁকি হ্রাসের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু চীন তার কোনও জবাব দেয়নি।

সরকারের সঙ্গে সরকারের আরও আলোচনার বিষয়ে চীন এখনও সম্মত নয়।