উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যেখানে দুই দেশের একে অপরকে প্রতিরক্ষা প্রদানের অঙ্গীকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার পিয়ংইয়ংয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক বিরল সফরের সময় তিনি ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এ বিষয়টি সম্পর্কে ঘোষণা দেন।
সারাদিনের ঘটনাগুলোকে গবমাধ্যমে বড় আকারে প্রচারের পর পুতিন ও কিম একটি “সামগ্রিক কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি” স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায়। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে।
চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে চুক্তি স্বাক্ষরের পর পুতিন জানান, এই চুক্তিতে একটি অনুচ্ছেদ রয়েছে, যার মাধ্যমে “চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী যেকোনো এক পক্ষের বিরুদ্ধে কেউ আগ্রাসন চালালে অপর পক্ষ তাকে সহায়তা করবে।” এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্স।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার প্রতি রাশিয়ার নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এর মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর বাতিল হওয়া পুরনো পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি ফিরিয়ে এনেছে রাশিয়া।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর কিম জানান, দুই দেশের সম্পর্ক “জোট” পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। তবে জনসম্মুখে করা কোনো মন্তব্যে পুতিন এই শব্দটি ব্যবহার করেননি,।
এই ঘটনা নিশ্চিতভাবেই রুশ-উত্তর কোরিয়ার সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিতকারী পশ্চিমা নেতাদের কপালে ভাঁজ ফেলবে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ হাজার হাজার কন্টেইনার ভর্তি গোলাবারুদ সরবরাহের অভিযোগ এনেছে।
এই চুক্তি স্বাক্ষরে অসংখ্য পর্যবেক্ষক বিস্মিত হয়েছেন। তাদের অনেকেই পূর্বাভাষ দিয়েছিলেন যে দুই দেশের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হলেও তা আনুষ্ঠানিক জোট গঠনের পর্যায়ে পৌঁছাবে না।
এই পদক্ষেপটি সোভিয়েত আমলে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের সুসম্পর্ক ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন না দুই দেশের সম্পর্ক সে পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া উভয়ই সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে, কারণ উভয় দেশের সঙ্গে পশ্চিমের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। তবে এই অংশীদারিত্বে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টানাপড়েনও দেখা গেছে।