ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রার্থনা ও ত্রাণ পাঠিয়ে এশিয়াজুড়ে মুসলিমদের ঈদুল আজহা উদযাপন

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ঈদুল আযহার। রয়টার্স ফাইল ছবি, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭।

ইসরায়েলি আগ্রাসনে মানবেতর জীবনযাপন করা গাজার ফিলিস্তিনিদের কল্যাণ কামনা করে এবং তাদের জন্য খাবার পাঠানোর মধ্য দিয়ে, সোমবার (১৭ জুন) এশিয়ার মুসলিমরা ঈদুল আযহা উদযাপন করছে।

নবী ইব্রাহীম (আ.)-এর বিশ্বাস ধারণ করে, ঈদুল আযহার নামাজ এবং গবাদি পশু জবাই ও গরীবদের মধ্যে মাংস বিতরণের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মুসলিমরা দিনটি পালন করে। প্রথা মতে, সামর্থ্যবান মুসলিমরা সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে পশু উৎসর্গ করেন এবং উৎসর্গ করা পশুর মাংসের দুই-তৃতীয়াংশ দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করেন। সৌদি আরবে হজযাত্রার চূড়ান্ত অনুষ্ঠানের সঙ্গে এই দিনটি মিলে যায়।

ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত ও বাংলাদেশসহ এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলে সোমবার ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। তবে, সৌদি আরব, লিবিয়া, মিশর ও ইয়েমেনসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে, একদিন আগে (রবিবার) ঈদ উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

সোমবার (১৭ জুন) ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় মুসল্লিরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন। ঈদের জামাতের আগে বক্তৃতায় ইমামরা গাজা ও রাফায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি মুসলিমদের কল্যাণ কামনায় সবাইকে প্রার্থনার আহবান জানান।

দক্ষিণ জাকার্তার একটি ইদগাহে, নামাজ পড়ার পর আদি প্রাসেত্য নামের একজন বলেন, “ফিলিস্তিনে কষ্টপীড়িত ভাই ও বোনদের প্রতি আমার প্রার্থনা ও সমবেদনা রয়েছে। দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে এখন সেখানে সাহায্য পাঠানোর অনেক উপায় আছে।”

বেরলিনা ইয়ুস্তিজা নামের আরেকজন বলেন, “আল্লাহ যুদ্ধবিধ্বস্তদের শক্তি দিন। যারা আত্মীয়দের ছেড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, তারা যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারে।”

বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি মুসলমান থাকলেও ইন্দোনেশিয়ার ঈদুল আযহার ঐতিহ্য অন্যান্য ধর্মের দ্বারা প্রভাবিত।

ভারতের মুসলিমরা সোমবার ঈদ উদযাপন করেছেন। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলিম।ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক জামা মসজিদে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন হাজার হাজার মুসল্লি। সকাল থেকেই মসজিদ প্রাঙ্গণ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। এসময় তারা একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং নামাজ শেষে কোলাকুলি করেন।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশেও ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়। যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ হয়ে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্বের প্রত্যাশায় দেশের মুসলমানরা ঈদের নাজাম আদায় করেছেন। দিনটি উদযাপনে আল্লাহর উদ্দেশে সারা দেশে লাখ লাখ গবাদি পশু কোরবানি দেয়া হয়। ধর্মীয় বিধি মতে কোরবানি দেয়া চলবে ঈদের তৃতীয় দিন পূর্বাহ্ন পর্যন্ত।