দক্ষিণ চীনের গুয়াংঝৌ শহরের এক আদালত শুক্রবার সে দেশের স্বতন্ত্র সাংবাদিক হুয়াং জুয়েকিন ও শ্রম অধিকার কর্মী ওয়াং জিয়ানবিংকে “রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে উস্কানি” দেওয়ার জন্য যথাক্রমে পাঁচ বছর ও সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছে।
‘ফ্রি হুয়াং জুয়েকিন ও ওয়াং জিয়ানবিং’ নামে একটি অনলাইন সমর্থক গোষ্ঠীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হুয়াং বলেছেন, এই সাজার বিরুদ্ধে তিনি আদালতে আপিল করবেন।
চীনের প্রশাসন এই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। তাই, গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি ওই রায় নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে সমর্থকদের দেওয়া তথ্যের উপরই নির্ভর করছে।
এক গোষ্ঠী জানিয়েছে, বিচারের আগে কর্তৃপক্ষ ধাতব বেষ্টনী স্থাপন করেছিল এবং আদালতে যাতে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য আদালতের চারপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
চীনের প্রশাসন হুয়াং ও ওয়াং-এর বেশ কয়েকটি কমপিউটার, মোবাইল ফোন ও হার্ড ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করেছে।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন, শুক্রবারের রায় দেখিয়ে দিলো, ফৌজদারি মামলা চাপিয়ে সামাজিক আন্দোলনকে নিষিদ্ধ করতে চীনের সরকার তৎপর। প্রশাসনকে প্রত্যক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ করে না এমন ক্রিয়াকলাপের জন্য কঠোর শাস্তি দিচ্ছে সে দেশের সরকার।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চীন বিষয়ক অধিকর্তা সারাহ ব্রুকস ভিওএ-কে ফোনে বলেন, “এই ঘটনা দেখিয়ে দিল যে, অহিংস বিক্ষোভের প্রশিক্ষণকেও বেইজিং এখন রাষ্টদ্রোহিতা বলে বিবেচনা করছে যা অবিশ্বাস্যরকমভাবে উদ্বেগের।”
২০২০ সালের আগে মানবাধিকার আইনজীবীদের উপর ফৌজদারি মামলা চাপিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সাজা দিত চীন। ব্রুকস বলেন, বেইজিং এখন নিচুতলার সমাজকর্মীদের বিরুদ্ধে একইরকম অভিযোগ এনে তাদের টার্গেট করছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে চীনে #মি টু আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করেছিল সেই সময় যৌন নিগ্রহের ঘটনার রিপোর্ট করতে নিগৃহীতাদের জন্য হুয়াং একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করেছিলেন। তিনি একাধিক সমীক্ষা প্রকাশ করে সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি এক গুরুতর সমস্যা।