রাশিয়া ও চীনের বাণিজ্য এবং এ আই নীতি নিয়ে জি সেভেন নেতাদের আলোচনা

জি সেভেনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বামে) ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি (ডানে), ইতালির বর্গো এগনাজিয়ায়। শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪।

জি সেভেনের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির নেতারা শুক্রবার অর্থনৈতিক নিরাপত্তাগত হুমকির বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার লক্ষ্যে জানিয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীন মূর্তিমান হুমকিস্বরূপ। এই ঝুঁকিগুলির মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে চীনের অতি-সক্ষমতা, রাশিয়ার যুদ্ধ-যন্ত্র ও তাদের বাণিজ্যকে সমর্থন এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বিনিয়োগ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জি সেভেনের দেশগুলিকে এই সব বিষয়ের উপর সর্বোচ্চ জোর দিতে চাপ দিচ্ছেন। ইতালির বর্গো এগনাজিয়ায় দ্বিতীয় দিন তারা সমবেত হয়েছিলেন। এই সম্মেলন আয়োজন করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি। নেতারা যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের চূড়ান্ত ইশতেহার প্রকাশ না করবেন ততক্ষণ এই গোষ্ঠী কতদূর এগোবে তা স্পষ্ট হবে না।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন, অস্ত্র তৈরি করতে রাশিয়াকে প্রযুক্তি ও বুদ্ধি সরবরাহ করছে চীন।

তিনি বলেন, “তাই তারা কার্যত রাশিয়াকে সাহায্য করছে।”

রাশিয়ার প্রতিরক্ষাগত শিল্প-ঘাঁটিতে বেইজিং-এর সমর্থন ও সাহায্য একটা “গুরুতর সমস্যা”; ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মস্কোর যুদ্ধের নিরিখেই শুধু নয়, বরং “ইউরোপের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি হুমকি” তৈরি করতে পারে এটা। বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা শুক্রবার সংবাদদাতাদের এমনটাই বলেছেন। প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী এই কর্মকর্তা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলেছেন।

চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে কিছু সদস্য উদ্বিগ্ন। চীনের গাড়ি নির্মাতারা সরকারের ভর্তুকি দেওয়া কম দামী ইভিগুলি ইউরোপের বাজারে হাজির করছে কিনা তা নিয়ে যখন তদন্ত চলছে সেই সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বুধবার চীন থেকে আমদানিকৃত বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বেশি শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে বাইডেন প্রশাসন চীনের ইভিগুলির উপর শুল্ক চারগুণ (অর্থাৎ ১০০ শতাংশ) বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি চীনের নির্দিষ্ট কিছু স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য, সোলার সেল ও সেমিকন্ডাক্টরের উপরও শুল্ক বাড়িয়েছে।

বিশ্বব্যাঙ্কের মতো বহুপাক্ষিক উন্নয়নমূলক ব্যাঙ্কগুলিকে সংস্কার করতে জি সেভেন তাদের অঙ্গীকারকে পুনরায় নিশ্চিত করতে চলেছে। তবে, ঋণ মওকুফ এবং নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলির জন্য প্যাকেজের পুনর্গঠন সংক্রান্ত কোনও চুক্তি বা সমঝোতায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে বিলম্ব হতে পারে।

পিজিআই-কে (পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার) সাহায্য করতে জি সেভেনভুক্ত দেশগুলি নিজস্ব একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে যেমন আফ্রিকাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে ‘মাত্তেই পরিকল্পনা’ নিয়েছেন মেলনি।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও এআই সংক্রান্ত নীতি-নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন জি সেভেনের নেতারা। জাপানে গত শীর্ষ সম্মেলনে হিরোশিমা ফ্রেমওয়ার্ক নামে যে নীতিগুলি গ্রহণ করা হয়েছিল তা আরও বর্ধিত করা হচ্ছে।

কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস ইউরোপের ফেলো রালুকা সেরনাটোনি ভিওএ-কে বলেন, আরও অনেক কাজ করার দরকার রয়েছে।