যুক্তরাষ্ট্র বলছে তারা রাশিয়ার আটক সম্পদ থেকে ইউক্রেনকে ৫ হাজার কোটি ডলার প্রদান করবে

যুক্তরাষ্ট্র-ইউৃক্রেন দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে করমর্দন করছেন।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে তারা এবং জি-সেভেনের অন্যান্য সদস্য কিয়েভকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ দেবে যা পশ্চিমি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে আটক রাশিয়ার সম্পদের সুদ থেকে পশ্চিমি মিত্রদের ঋণ পরিশোধ করা হবে।

এই ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এলো যখন ইটালির পুগুলিয়ায় বোর্গো ইজানিয়া বিলাসবহুল অবকাশ যাপন কেন্দ্রে ধনী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ অফ সেভেনের নেতাদের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার মিলিত হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বাইডেন জি-সেভেন নেতাদের চাপ দিচ্ছেন তারা যেন ইউক্রেনকে সরাসরি অর্থ দিতে তার পরিকল্পনায় রাজি হয় এবং রাশিয়ার যে ২৮ হাজার কোটি ডলার আটকে রয়েছে তার সুদ ব্যবহার করে তাদের ঋণ শোধ করা হবে ।

অনুমান করা হচ্ছে এই জব্দ করা অর্থ থেকে বছরে তিন শ’ কোটি কিংবা তারও বেশি সুদ আসবে। কাজেই সুদের ঐ অর্থ থেকে ১০ বছর কিংবা তার বেশি সময়ের মধ্যে ৫ হাজার কোটি ডলারের ঐ ঋণ পরিশোধ সম্ভব হবে যে অবধি রাশিয়া ক্ষতিপূরণ না দেয়।

মে মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও কম আগ্রাসী পরিকল্পনার ব্যাপারে রাজি হয়েছিল । সেই পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে ঐ অর্থের বার্ষিক সুদের অর্থ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল।

আশা করা হচ্ছে জি-সেভেন ভুক্ত অন্যান্য দেশগুলি ঘোষণা করবে তারােইউক্রেনকে কি পরিশাণ অর্থ দেবে।

তবে একজন শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সংবাদদাতাদের বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র ৫ হাজার কোটি ডলারের সবচাই দিতে রাজি আছে। যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র ঋণদাতা হবে না বরঞ্চ অন্যান্য জি-সেভেন সদস্যের সাথে ‘ঋণদাতাদের সিন্ডিকেটের অংশ হবে। ইউক্রেন কত শিগগির এই অর্থ কাজে লাগাতে পারবে তার উপর নির্ভর করে এই অর্থ “চলতি বছরই” দেয়া যেতে পারে।

সংবাদদাতাদের ব্রিফিং এর সময় কর্মকর্তাটি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ ইউএসএআইডি ঋণের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই কংগ্রেসের অনুমোদন পেয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কোন সময়সূচি দেওয়া হয়নি কিংবা কত অর্থ দেয়া হবে সেটাও বলা হয়নি কিন্তু আমরা ৫ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত দিতে পারবো”।

যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে জব্দ করা প্রায় ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের রুশ সম্পদ আটক করার ব্যাপারে এপ্রিল মাসেই বাইডেন একটি আইনে স্বাক্ষর করেন। আটক করা অর্থের বেশি ভাগই, ১৯ হাজার কোটি ডলার রয়েছে বেলজিয়ামে এবং অবশিষ্টের বেশির ভাগ রয়েছে ফ্রান্স ও জার্মানিতে।

যুক্তরাষ্ট্র -ইউক্রেন নিরাপত্তা চুক্তি

পর পর দ্বিতীয় বছরে এই শীর্ষ সম্মলনে যোগ দিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি চুক্তিটির অনুমোদনের জন্য বলছেন। তিনি এবং বাইডেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৃথক একটি দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেন যাতে ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা উল্লেখ করা হয়।

হোয়াইট হাউজের তথ্য-পত্রে বলা হয়েছে ১০ বছরের এই চুক্তিতে বলা হয়েছে , ইউক্রেনের শক্ত প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধ সক্ষমতা গড়ে তোলা এবং তা অব্যাহত রাখতে , দীর্ঘ মেয়াদের জন্য লড়াইয়ে ইউক্রেনের ক্ষমতা জোরালো করতে এবং এমন একটি ন্যা্য্য শান্তি অর্জনে দুই পক্ষই একত্রে কাজ করবে যেখানে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইউক্রেনের অধিকারকে সম্মান জানানো হবে।

এই চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আরও কোন আক্রমণে উভয় পক্ষই নিজেদের মধ্যে সলাপরামর্শ করবে এবং তারা “ইউক্রেনকে ইউরো-অ্যাটলান্টিক সংহতির সঙ্গে একাত্ম করতে কাজ করে যাবে”।