ইরান ইউরেনিয়াম পরিশোধন কর্মসূচি বাড়াচ্ছে, বলছেন কূটনীতিকরা

২০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য জোড়া ক্যাসকেডের মধ্যে থাকা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শক ও ইরানের কারিগররা। নাতানজের কাছে এক পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, ইরান। ফাইল ফটোঃ ২০ জানুয়ারি, ২০২৪।

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি বোর্ড গত সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেছিল, তবে তেহরান এর পাল্টা জবাবে তাদের দুটি ভূগর্ভস্থ অঞ্চলে ইউরেনিয়ামের পরিশোধন প্রক্রিয়া সম্প্রসারিত করেছে বলে কূটনীতিকরা বুধবার জানিয়েছেন। তারা আরও যোগ করেছেন, অনেকে যতটা আশংকা করেছিল তত বেশি নয় এই বৃদ্ধি।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার ৩৫টি দেশের বোর্ড অফ গভর্নরস-এর আনা এই ধরনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ইরান কড়া অবস্থান নিয়েছে এবং ১৮ মাস আগের এক প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় তারা ইউরেনিয়ামকে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় উন্নীত করেছে (যা অস্ত্রে ব্যবহারের জন্য প্রায় উপযোগী) দ্বিতীয় এক স্থানে। পাশাপাশি সে দেশ ঘোষণা করেছে যে, এই সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আরও ব্যাপকভাবে বাড়ানো হবে।

পাঁচজন কূটনীতিক বলেছেন, ইরান এবার তাদের ভূগর্ভস্থ সমৃদ্ধকরণ স্থলে সেন্ট্রিফিউজের আরও গুচ্ছ বা ক্যাসকেড প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করেছে। এই যন্ত্রগুলি ইউরেনিয়ামকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। এই কূটনীতিকদের তিনজন বলেছেন, ইরানের অগ্রগতির দিকে নজরদারি করা আইএইএ পরিদর্শকরা সদস্য দেশগুলির কাছে বৃহস্পতিবার একটি প্রতিবেদন পেশ করার পরিকল্পনা করেন।

ইরানের কর্মযজ্ঞ বৃদ্ধির মাত্রা প্রসঙ্গে ভিয়েনাভিত্তিক এক কূটনীতিক বলেন, “আমি যতটা ধারণা করেছিলাম ততটা নয়।”

গত মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দোল্লাহিয়ার মৃত্যু ও ২৮ জুনে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কেন? আমি জানি না। হয়ত তারা নতুন সরকারের জন্য অপেক্ষা করছে।”

আইএইএ বোর্ড এক সপ্তাহ আগে একটি প্রস্তাব করেছে যাতে ইরানকে আইএইএ-র সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে এবং পরিদর্শকদের উপর সম্প্রতি চাপানো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়। তেহরান পরমাণু কর্মসূচি বৃদ্ধির মাধ্যমে এর প্রত্যুত্তর দেবে বলে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ওই বোর্ড পদক্ষেপ নিয়েছিল। কেবলমাত্র রাশিয়া ও চীন বিরোধিতা করেছিল।

কতগুলি বা কোন ধরনের সেন্ট্রিফিউজ যোগ করা হচ্ছে বা কোন মাত্রায় তা করা হচ্ছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি কূটনীতিকরা, যদিও একজন কূটনীতিক বলেছেন, ইরান এখনই ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন বাড়াবে না। ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধি বা মান ৯০ শতাংশ হলে তা অস্ত্রে ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে।

কূটনীতিকরা বলেছেন, ইরান আসলে যা করেছে সে সম্পর্কে আইএইএ যা বলেছে তা দেখার জন্য তারা অপেক্ষা করবেন, তবে ইরানের পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা অবগত।

একজন কূটনীতিক বলেছেন, এই পদক্ষেপ “প্রত্যাশার একেবারের শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং আমরা বেশ নিশ্চিত যে, কিছু কাজ তারা যে কোনও উপায়ে করতে চলেছে।” এর অর্থ হল, প্রস্তাব ছাড়াও এটা ঘটতো।