যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের পথে

ফাইল- ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্যারিসের ইন্টারন্যাশানাল হোটেলে। আশা করা হচ্ছে ১৩ জুন এই দুই নেতা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ইতালিতে গ্রুপ অফ সেভেন শীর্ষ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করবেন বলে কথা আছে।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সালিভান বলেন এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেওয়া হবে।

সালিভান বলেন, “ভ্লাদিমির পুতিন যদি মনে করেন যে ইউক্রেনের সমর্থক জোটকে তিনি পাশ কাটিয়ে যেতে পারবেন তা হলে তিনি ভুল ভাবছেন”। তিনি আরও বলেন যে চুক্তিটিতে আরও ১৫টি দেশ স্বাক্ষর করেছে তবে তাতে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার ব্যাপারে সরাসরি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য পাঠানোর কোন প্রতিশ্রুতি থাকছে না।

হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কার্বি মঙ্গলবার সংবাদদাতাদের বলেন, “ আমরা রাশিয়ার এই যুদ্ধ যন্ত্রের ব্যয় বাড়ানো অব্যাহত রাখবো, আমরা রাশিয়ার অব্যবহৃত স্বায়ত্ত্ব সম্পদের মূল্য অবমুক্ত করার নতুন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করবো যাতে ইউক্রেন লাভবান হবে এবং মি পুতিনের সেনাবাহিনী ইউক্রেনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা থেকে তাদের উদ্ধার পেতে সাহায্য করবো”।

জি- সেভেন নেতারা এই শীর্ষ বৈঠকে আরও কিছু চ্যালেঞ্জের কথা তুলে থরার পরিকল্পনা করছেন যেগুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, চীনের সঙ্গে বানিজ্যের ভারসাম্যহীনতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অভিবাসন।

এ বছরের ১৩-১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য এই শীর্ষ সম্মেলন জি-সেভেনের কোন কোন নেতা যারা নিজেদের দেশে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তাদের জন্য শেষ সম্মেলন হতে পারে। ডেমক্রাট বাইডেন রিপাবলিকানদের সম্ভাব্য প্রার্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছেন। এ দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক নির্বাচনে অনেকগুলো অতি-ডানপন্থি ইউরোপীয় দল জয়লাভ করেছে।

কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশংকা করছেন যদি জি-সেভেন নেতারা অভিন্ন বিষয়গুলিতে ঐকমত্য পোষণে ব্যর্থ হন, তা হলে কি হবে!

আন্তর্জাতিক বিষয়ের চিন্তক গোষ্ঠী আটলান্টিক কাউন্সিলের জিও-ইকনমিক সেন্টারের ঊর্ধ্বতন পরিচালক জোশ লিপ্সকি বলেন, “ আপনার যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপের কর্মকর্তাদের কাছে এ রকম কথা প্রায়ই শুনে থাকেন: আমরা যদি এখনই এটা করিয়ে নিতে না পারি, সেটা চীনের ব্যাপারেই হোক কিংবা সম্পদের ব্যাপারে , আমাদের আরেকটা সুযোগ না ও হতে পারে। আমরা ঠিক জানিনা এখন থেকে তিন মাস পর, ছয় মাস পর, নয় মাস পর পৃথিবীটা ঠিক কেমন হবে”।

কার্বি অবশ্য আশাবাদি কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস আছে যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আসনগুলি যারাই লাভ করুন না কেন আমরা আমাদের অভিন্ন বিষয়গুলি নিয়ে ইউরোপ মহাদেশ জুড়েই ইউরোপীয় সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করে যাবো। আর তাতে থাকছে ইউক্রেনকে সমর্থনের কথাও”।

জেলেন্সকির সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর বাইডেনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন করার পরিকল্পনা আছে।

এই প্রবিদেনের কিছু তথ্য এপি, রয়টার্স ও এএফপি’র কাছ থেকে নেয়া হয়েছে।