আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপের আরেকটি স্বল্প স্কোরের খেলায় সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ রানে বাংলাদেশকে পরাজিত করেছে। নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ পিচের মান নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু করে দিতে পারে।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রানে সীমাবদ্ধ থাকে। হাইনরিখ ক্লাসেন ৪৪ বলে ৪৬ রান হাঁকান।
বাংলাদেশের পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব ১৮ রানে তিন উইকেট পান, যা ছিল তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান।
তবে, জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে মাত্র ১০৭ রান করতে সক্ষম হয়, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রুপ ডি’র শীর্ষে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করে।
মাত্র ১১৪ রানের লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে স্টেডিয়ামের বিতর্কিত উইকেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ প্রোটিয়াস বোলারদের গতির মুখে শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে।
দশ ওভার শেষে তারা ৪ উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তোলে। কাগিসো রাবাদা তানজিদ হাসানের (৯) উইকেট দখল করেন। আনরিখ নরটে ফেলে দেন ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান শান্ত আর সাকিব আল-হাসানের উইকেট। লিটন দাস মাত্র ৯ রান করার পর স্পিনার কেশভ মহারাজের বলে আউট হন।
তবে তৌহিদ হৃদয়, যিনি শ্রী লঙ্কার বিরুদ্ধে জয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন, এবং ৩৮ বছর বয়স্ক মাহমুদউল্লাহ টাইগারদের ইনিংস স্থিতিশীল করতে সক্ষম হন।
এই জুটি চতুর্থ উইকেটে ৪৪ রান তোলার পর হৃদয় রাবাদার বলে এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে পড়েন। হৃদয়ের ৩৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে ছিল দুটি ৬ এবং দুইটি চার।
শেষ ওভারের আগের ওভারে বাংলাদেশ ৭ রান সংগ্রহ করে কিন্তু তারপরও শেষ ওভারে তাদের ১১ প্রয়োজন ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ওভার বল করেন মহারাজ।
ওভারের শেষ চার বলে প্রয়োজন ছিল ৭ রান। চাপ বাড়তে থাকায় মাহমুদউল্লাহ এবং জাকির আলী লং অন দিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করলে দুজনই আউট হয়ে যান।
শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ৬, কিন্তু তাসকিন আহমেদ শুধু একটি রান তুলে সক্ষম হন।
এর আগে, প্রোটিয়াস ক্যাপ্টেন এইডেন মারক্রাম টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস ৬ উইকেটে ১১৩ তে সীমিত করে দেয়। তানজিম হাসান সাকিবের বিধ্বংসী বোলিংকে সমর্থন দেন ১৯ রানে ২ উইকেট নেয়া তাসকিন আহমেদ।
এক পর্যায়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কঠিন অবস্থায় ছিল। তারপর ক্লাসেন এবং ৩৫ বছর বয়স্ক ডেভিড মিলার পঞ্চম উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়ে দলকে কিছুটা উদ্ধার করেন।
ক্লাসেন ১৮তম ওভারে তাসকিনের বলেন বোল্ড হবার আগে ৩টি ছয় আর দুটি চার দিয়ে ৪৪ বলে ৪৬ রান তোলেন। দলের রান তখন ১০২।
আর চার বল পরেই মিলার, যিনি নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ম্যাচ-জয়ী অপরাজিত ৫৯ রান করেছিলেন, রিশাদ হোসেনের স্পিন বলে আউট হন। তিনি ৩৮ বলে ২৯ রান সংগ্রহ করেন।
বাংলাদেশের তানজিম দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ধস শুরু করেন, তার প্রথম বলে উদ্বোধনী ব্যাটার রিযা হেন্ড্রিক্স-এর উইকেট নিয়ে। তারকা ব্যাটার কোয়েন্টিন ডে কক ১৮ রান হাঁকানোর পর ২১ বছর বয়স্ক তানজিমের বলে বোল্ড হন।
তানজিম তাঁর তৃতীয় উইকেট (ট্রিস্টান স্টাবস) দখল করার আগে তাসকিন মারক্রামের (৪) স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন।
মিলার ১৩ রানের মাথায় আউট হয়ে হতে পারতেন, যখন তিনি মাহমুদউল্লাহর স্লো বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন, কিন্তু লিটন দাস ক্যাচটি ধরে রাখতে পারেন নি।