সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৈধ বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং সহিংসতা ও ঘৃণ্য অপরাধ বন্ধ করার জন্য, বিধি-বিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
সোমবার (১০ জুন) রাজধানী ঢাকায়, ‘ডিক্যাব-টক’ এ অংশ নিয়ে, এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। “আমরা আমাদের ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্টের মাধ্যমে ইউরোপে এটি নিয়ন্ত্রণ করেছি;” জানান হোয়াইটলি।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট, মেটার মতো প্রতিষ্ঠানের উপর দায় চাপিয়ে দিতে সক্ষম। “উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা যদি ইন্টারনেট থেকে খুব দ্রুত ঘৃণামূলক বক্তব্য সরিয়ে না নেয়, তবে ইউরোপের বাজারে এর প্রভাব পড়বে;” যোগ করেন চার্লস হোয়াইটলি।
সহিংসতার বিস্তার রোধে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নিষ্ক্রিয়তার কথা উল্লেখ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। বলেন, “প্রতিটি দেশে ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিকগুলো মোকাবেলা করছে। আর এই দিকগুলোর সমাজে প্রভাব ফেলছে।”
চার্লস হোয়াইটলি আরো বলেন, এগুলোর বিরুদ্ধে কি ভাবে আরো পদক্ষেপ নেয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা চলছে এবং বাংলাদেশেও একই বিতর্ক ব্যাহত আছ।
“সুতরাং, অবশ্যই, আপনাদের ডিজিটাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) রয়েছে। আপনারা কি ভাবে মিথ্যা তথ্য মোকাবেলা করবেন, তা নিয়ে কথা বলছেন। তবে, সবকিছুর মূল বিষয় হলো, আপনাদেরকে এমনভাবে এটি করতে হবে; যাতে বাক স্বাধীনতার অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার সংরক্ষণ হয় এবং এগুলোকে সম্মান করা হয়;” বলেন চার্লস হোয়াইটলি।
তিনি বলেন, একটি দায়িত্বশীল সরকারকে সহিংসতা ও ঘৃণ্য অপরাধ বন্ধ করা এবং বৈধ বাকস্বাধীনতার সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে খুব সূক্ষ্ম একটি ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করতে হবে।
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমি মনে করি আমরা সবাই একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারি। আমাদের কিছু সদস্য রাষ্ট্রের ইউরোপীয় ইউনিয়নে এই ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্য রয়েছে। নিঃসন্দেহে আমেরিকার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।”
“আপনারা জানেন, ইউরোপীয় আইনে আপনারা যা দেখেন, তার চেয়ে নির্দিষ্ট ধরণের বক্তব্যের জন্য সহনশীলতার বিভিন্ন স্তর রয়েছে। সুতরাং আমাদের ঐতিহ্য আছে; কিন্তু মূল কথা হলো, আমাদের সবারই বাক স্বাধীনতা থাকা দরকার। আমাদের সমাজে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এটি একটি জটিল ধাঁধা;” তিনি যোগ করেন।
উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নেতা, সুশীল সমাজের সদস্য, যুদ্ধাপরাধ বিরোধী প্রচারণাকারী, যুদ্ধের নায়ক ও শহীদদের পরিবারের কাছ থেকে প্রায়ই অভিযোগ আসে যে ফেসবুক বাংলাদেশে ঘৃণামূলক বক্তব্য বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উসকানি দেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে।