বাংলাদেশের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে মোবাইল ফোনের সিমনির্ভর সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করায় টেলিযোগাযোগ সেবা ব্যয়বহুল হবে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “আমি শুধু সিম/রুইম কার্ড সমর্থিত মোবাইল টেলিকম সার্ভিসের (সার্ভিস কোড এস০১২.১০) ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।”
প্রতিটি সিম বা ই-সিম কার্ড সরবরাহের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাটের পরিমাণ ২০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নির্ধারণের প্রস্তাব করেন তিনি।
এ ছাড়া, বাড়বে মোবাইলে কথা বলার ব্যয়। বর্তমানে একজন গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৭৩ টাকার কথা বলতে পারেন। আর বাকি ২৭ টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ কেটে রাখা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সেবার ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তা ৬৯ টাকা ৩৫ পয়সার কথা বলতে পারবেন।
বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপে টেলিকম শিল্পের ওপর চাপ বাড়ছে: অ্যামটব
এদিকে মোবাইল সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক অতিরিক্ত ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করার সরকারি সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অ্যামটবের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপটি টেলিকম শিল্প এবং মোবাইল গ্রাহক উভয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুল্কের এই বৃদ্ধি ভয়েস এবং ইন্টারনেট পরিষেবার ব্যয় বাড়াবে। যা ব্যবহারকারীদের ওপর বিশেষ করে প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে। সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এটি সম্ভাব্যভাবে মোবাইল পরিষেবা ব্যবহার হ্রাস করতে পারে। ফলে ব্যবসায়কে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় হ্রাস করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিম কার্ডের ওপর উচ্চ ভ্যাট নতুন ব্যবহারকারীদেরকে নিরুৎসাহিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে দেশে মোবাইল সংযোগের প্রবৃদ্ধিকে আরও কমিয়ে দেবে, যেখানে জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ মানুষ এখনো মোবাইল ব্যবহার করে না।
অ্যামটব জোর দিয়ে বলেছে, এই পদক্ষেপগুলো দেশের সামগ্রিক ডিজিটালাইজেশনকে বাধাগ্রস্ত করবে, জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে এবং সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এই উদ্বেগ থেকে অ্যামটব সরকারকে এই দায়িত্বগুলো পুনর্বিবেচনা করার এবং তাদের পূর্ববর্তী টেলিকম বাজেটের সুপারিশগুলো বিবেচনায় নিয়ে শিল্পকে সহযোগিতা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দিকে অব্যাহত অগ্রগতি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।