তালিবানের সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার ঘোষণা করে ১৪ জন নারীসহ ৬৩ জন কে সমকামিতা, অবৈধ যৌনসম্পর্ক এবং অন্যান্য “অনৈতিক সম্পর্কের”কারণে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা হয়েছে।
প্রায় তিন বছর আগে কাবুলের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর মৌলবাদী তালিবান শাসকরা এতো বিপুল সংখ্যক তালিবানকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করলো।
আফগান প্রদেশ সার-এ-পুলের রাজধানীর সেন্ট্রাল স্পোর্টস স্টেডিয়ামে এই মঙ্গলবার শাস্তি প্রদান করা হয় বলে ঘোষণায় বলা হয়েছে। দর্শকদের মধ্যে ছিলেন ওই প্রদেশের গভর্ণর, নিরাপত্তা কর্মকর্তাবৃন্দ এলাকার বয়োঃজ্যেষ্ঠরা এবং সাধারণ মানুষ জন।
২০২১ সালে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় গ্রহণ করার পর থেকে সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন স্টেডিয়ামে শত শত নারীও পুরুষকে তালিবান প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করেছে। অন্তত পাঁচজন আফগান নাগরিক যারা হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিল তাদেরকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি তালিবান শাসনের অধীনে বিচার ও প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড প্রদানের সমালোচনা করে বলেছে এগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে নিষিদ্ধ। তারা দাবি করে যে এই প্রথা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
আড়ালে থাকা তালিবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা আন্তর্জাতিক সমালোচনা এবং ইসলামের ব্যাপারে তার কট্টের ব্যাখ্যার সঙ্গে খাপ খাইয়ে ইসলামি ফৌজদারি বিচারের প্রয়োগ বন্ধ করার জন্য আহ্বানকে তিনি অবজ্ঞা করে আসছেন।
অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য তিনি প্রকাশ্যে নারীদের উপর পাথর নিক্ষেপ প্রয়োগ করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন যদিও এখনও এ রকম শাস্তি প্রদানের কোন খবর পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘ তাঁর ঘোষণাকে বিব্রতকর বলে এর সমালোচনা করেছে।
আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলি তালিবান আবার ক্ষমতায় ফিরে আসায় সেখানকার ক্রম অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষত আফগান নারীদের অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেছে এবং দাবি জানিয়েছে যে তারা যেন নারী ও নাগরিক স্বাধীনতার উপর আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়।
বর্তমান আফগান কর্তৃপক্ষ মেয়েদের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর উপর পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছে এবং বহু নারীকে সরকারী এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। আর তাই পুরুষ কেবল তালিবান সরকারকে কুটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদানে বিরত থাকছে বিশ্ব।