প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, ২০১৬ সালের নির্বাচন বেআইনিভাবে প্রভাবিত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হবার পর রবিবার বলেছেন তিনি সম্ভাব্য কারাভোগ সামলাতে পারবেন। তবে তিনি বলেন, তিনি নিশ্চিত না “জনগণ সেটা গ্রহণ করতে পারবে কি না।”
রবিবার “ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস উইকেন্ড” অনুষ্ঠানে এক রেকর্ড করা সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় জনগণের জন্য এটা গ্রহণ করা কঠিন হবে। আপনি জানেন, কোন এক পর্যায়ে, সহ্যের বাঁধ ভাঙতে পারে।”
জনগণের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, সে ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলেন নি।
প্রথম বারের মত একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের ফৌজদারি মামলার সমাপ্তি নিয়ে বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “এটা খুব কঠিন সমাপ্তি ছিল।”
ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির অনানুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ২০২৪ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখোমুখি হবেন, যে ডেমক্র্যাট তাঁকে ২০২০ সালে পরাজিত করেছিল।
এই সময় ট্রাম্পের সামনে এখন সর্বোচ্চ চার বছর জেল বা প্রোবেশনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আপিলের প্রস্তুতি
ট্রাম্পের আইনজীবী উইল সার্ফ এবিসি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের “দিস উইক” অনুষ্ঠানে বলেন, “আমার মনে হয় না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে শেষমেশ কোন প্রকার সাজাই দেয়া হবে।”
তিনি বলেন, ট্রাম্পের আইনজীবীরা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে, “একেবারে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যদি প্রয়োজন হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।”
রিপাবনলিকান পার্টির জাতীয় কনভেনশনে দলের ডেলিগেটরা ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে টানা তৃতীয় বারের মত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পার্টির প্রার্থী মনোনীত করার পরিকল্পনা করছে। কনভেনশনের কয়েক দিন আগে, ১১ জুলাই আদালত ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করবে।
প্রথম প্রেসিডেন্ট অপরাধী
ডনাল্ড ট্রাম্পকে নিউ ইয়র্কের এক আদালত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে। তিনি প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচার এবং দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
বারো সদস্যর জুরি ট্রাম্পকে ২০১৬ সালের নির্বাচন বেআইনি ভাবে প্রভাবিত করার লক্ষে তাঁর ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতি করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। এই প্রক্রিয়ায় স্টরমি ড্যানিয়েলস নামক একজন পর্ণ তারকার মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেয়া হয়েছিল।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাঁর ব্যবসায়িক কোম্পানির রেকর্ড জালিয়াতি করার ৩৪টি অভিযোগ গঠন করা হয় এবং জুরি তাঁকে ৩৪টি অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করে।
জুরির রায় বৃহস্পতিবার এক বিচারের সমাপ্তি টানল, যেটার কেন্দ্রে ছিল সেক্স এবং আর্থিক বিষয় ধামাচাপা দেয়ার প্রয়াস। এই রায় ট্রাম্পকে কারাগারে যাবার ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। এই রায় ট্রাম্পের জন্য একটি অসাধারণ আইনগত হিসেব-নিকেশের মুখোমুখি করেছে।
তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনটাতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় নাই।
রায়টি আসলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ছয় মাস আগে, যেখানে ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের পদপ্রার্থী। একজন পর্ণ তারকার মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেয়া একজন অপরাধীকে ভোট দিতে ভোটাররা কতটুক ইচ্ছুক হবেন, এই রায় সেটা পরীক্ষা করবে।