চীনের মহাকাশ প্রোব সফলভাবে চাঁদের দূরবর্তী অংশে অবতরণ করেছে

বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার দেয়া ছবিতে দেখা যাছে, চাং'ই-৬ চন্দ্র প্রোব নিয়ে লং মার্চ-৫ রকেট চীনের হাইনান প্রদেশের ওয়েনচ্যাং স্পেস লঞ্চ সাইট থেকে উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে। ফটোঃ ৩২ মে, ২০২৪।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া রবিবার জানিয়েছে, চীনের চাং'ই-৬ চন্দ্র প্রোব সফলভাবে নমুনা সংগ্রহের জন্য চাঁদের দূরবর্তী অংশে অবতরণ করেছে। এটি বেইজিংয়ের কয়েক দশক পুরনো মহাকাশ কর্মসূচির সর্বশেষ অগ্রগতি।

চীনের জাতীয় মহাকাশ এডমিনিস্ট্রেশনকে উদ্ধৃত করে সিনহুয়া বলে, সৌরজগতের সবচেয়ে বড় পরিচিত ইমপ্যাক্ট ক্রেটারগুলির মধ্যে একটি, বিশাল দক্ষিণ মেরু-আইটকেন অববাহিকায় চাং'ই-৬ অবতরণ করে।

সংস্থাটির মতে, প্রথমবারের মতো চাঁদের খুব কমই অন্বেষণ করা এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

চাং'ই-৬ ৫৩ দিনের একটি প্রযুক্তিগতভাবে জটিল মিশনে রয়েছে যা ৩ মে শুরু হয়।

এখন যেহেতু প্রোবটি অবতরণ করেছে, এটি চন্দ্রের মাটি এবং শিলা তোলার চেষ্টা করবে এবং ল্যান্ডিং জোনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে।

সিনহুয়া জানায়, এই প্রক্রিয়াটি দুই দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়া উচিত। প্রোবটি এই সংগ্রহের জন্য দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করবে: পৃষ্ঠের নীচে নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি ড্রিল এবং পৃষ্ঠ থেকে নমুনাগুলি দখল করার জন্য একটি রোবোটিক হাত।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার দেয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ছাতা মাথায় লোকজন চাং'ই-৬ চন্দ্র প্রোব নিয়ে লং মার্চ-৫ রকেট উৎক্ষেপণের দৃশ্য দেখছে। ফটোঃ ৩ মে, ২০২৪।

তারপরে, প্রোবটিকে চাঁদের ওই পাশ থেকে একটি নজিরবিহীন উৎক্ষেপণের চেষ্টা করতে হবে যা সর্বদা পৃথিবীর দিক থেকে ঘুরে থাকে।

বিজ্ঞানীরা বলেন চাঁদের অন্ধকার দিককে এমন বলা হয় কারণ এটি পৃথিবী থেকে অদৃশ্য, এই কারণে নয় যে এই অংশে কখনই সূর্যের রশ্মি পড়ে না। এই অন্ধকার দিকটি গবেষণার জন্য বিপুল প্রতিশ্রুতি রাখে কারণ এর গর্তগুলি চাঁদের নিকটবর্তী অংশের তুলনায় প্রাচীন লাভা প্রবাহ দ্বারা কম আবৃত।

অন্ধকার দিক থেকে সংগৃহীত উপাদানগুলি কীভাবে প্রথম চাঁদ তৈরি হয়েছিল তার উপর আরও আলোকপাত করতে পারে।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে চীনের "মহাকাশ স্বপ্ন" এর পরিকল্পনার কার্যকলাপ ত্বরান্বিত করা হয়েছে।

গত এক দশকে বেইজিং তার মহাকাশ কর্মসূচিতে এক ঝাঁক উচ্চাভিলাষী উদ্যোগকে লক্ষ্য করে বিপুল সম্পদ ঢেলেছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে দুটি ঐতিহ্যবাহী মহাকাশ শক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার সাথে চীনের ব্যবধান কমিয়ে আনা।

তারা তিয়াংগং বা "স্বর্গীয় প্রাসাদ" নামে একটি মহাকাশ স্টেশন নির্মাণ সহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

বেইজিং মঙ্গল গ্রহ এবং চাঁদে রোবোটিক রোভার অবতরণ করেছে এবং চীন তৃতীয় দেশ যারা স্বাধীনভাবে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে মানুষসহ যান স্থাপন করেছে।

তবে ওয়াশিংটন সতর্ক করেছে যে চীনের মহাকাশ কর্মসূচি সামরিক উদ্দেশ্যকে ঢাকার জন্য এবং মহাকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

চীন ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারীসহ একটি মিশন পাঠানোর লক্ষ্য রাখে এবং চন্দ্র পৃষ্ঠে একটি ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রও তার আর্টেমিস ৩ মিশনের মাধ্যমে ২০২৬ সালের মধ্যে মহাকাশচারীদের চাঁদে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে।