রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৯ দিনের ব্যবধানে আবার অগ্নিকাণ্ড

কক্সবাজার জেলার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩ নম্বর ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলা বাজারে আগুন লেগেছে। ১ জুন, ২০২৪।

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৯ দিনের ব্যবধানে আবার আগুন লেগেছে। শনিবার (১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ১৩ নম্বর ক্যাম্পের কাঁঠাল গাছতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে, গত ২৪ মে একই স্থানে আগুন লেগেছিলো।

উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক কামাল হোসেন জানান, এক ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায়, উখিয়া ফায়ার সার্ভিস দল আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

এ অগ্নিকাণ্ডে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।শনিবার (১ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুনের সুত্রপাত হয় এবং দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক কামাল হোসেন জানান, আগুনে কয়েকটি ঘর ও বেশ কয়েকটি দোকানপাট পুড়ে গেছে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন বলেন, দুই শতাধিক ঘর ও এনজিওর অফিস পুড়ে গেছে। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়া হবে।”

এপিবিএনের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর বলেন, “আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে, তা বের করার চেষ্টা চলছে। এটা দুর্ঘটনা না কি, পরিকল্পিত আগুনের ঘটনা তাও তদন্ত করা হবে।”

আগের অগ্নিকাণ্ড

গত ২৪ মে আগুন লাগলে, উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচ শতাধিক ঘর পুড়ে যায়। তবে, সেই দিনের আগুনে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

রফিক নামে ক্যাম্পের এক বাসিন্দা জানিয়েছিলেন যে তাদের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। আর, উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক কামাল হোসেন জানিয়েছিলেন, প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে দোকানসহ পাঁচ শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৫ মার্চ উখিয়ার বালুখালীতে তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ হয় ২২ হাজার মানুষ।

সেই দিন বিকাল তিনটার দিকে, ১১ নম্বর ক্যাম্পের বি ও ই ব্লকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে পার্শ্ববর্তী ১০ ও ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

অগ্নিকাণ্ডে দুই হাজারের কাছাকাছি ঘর পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছিলেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।

অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেছিলেন, “প্রাথমিক তথ্য মতে, ২ হাজারের মত ঘর পুড়েছে। তবে হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। তবে ২২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

ক্যাম্পের ওই আগুনকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে উল্লেখ করেছিলেন রোহিঙ্গারা। আরসা সন্ত্রাসীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবলু কামাল, আবদুল গফুর ও শামসুল আলম।

এর আগে, একই ক্যাম্পে ২০২১ সালের ২২ মার্চ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছিলো। ঐ সময় ১১ জনের মৃত্যু হয় এবং আহত হয় ৫ শতাধিক মানুষ। আর পুড়ে গিয়েছিলো ৯ হাজারের বেশি ঘর।