রাফার কেন্দ্রভাগে ইসরায়েলের তীব্র অভিযান

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বোমা হামলায় আহত এক ফিলিস্তিনি শিশুকে ২০২৪ সালের ৩০ মে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ৩০ মে, ২০২৪।

শুক্রবার ইসরায়েলের বাহিনী গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রায় আট মাসের যুদ্ধের সর্বসাম্প্রতিক কেন্দ্রবিন্দু দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার আশেপাশে বিমান হামলার কথা জানিয়েছেন।

মিশরের সাথে গাজার সীমান্তবর্তী শহরটিতে আশ্রয় নেয়া বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক আপত্তি সত্ত্বেও মে মাসের শুরুতে রাফায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

সপ্তাহান্তে বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং এতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়ে। এই ঘটনা নতুন করে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঢেউ তুলেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার রাফা এলাকার পাশাপাশি মধ্য গাজার নুসেইরাত এলাকায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে। এএফপির এক সংবাদদাতা উত্তরাঞ্চলে তীব্র বোমা বর্ষণের কথা জানিয়েছেন।

দেইর আল-বালাহ’র একটি হাসপাতাল ও নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে, রাতভর দুটি পৃথক স্থানে হামলায় মোট ১১ জন নিহত হয়েছে।

রাফা অভিযান শুরুর আগে জাতিসংঘ জানিয়েছিল, ১৪ লাখ মানুষ শহরটিতে আশ্রয় নিয়েছে। এরপর থেকে ১০ লাখ মানুষ ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে বলে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউ জানিয়েছে।

জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, গাজায় দুর্ভিক্ষ হতে পারে।

ইসরায়েল রাফা ক্রসিং দখলের ফলে গাজার ২৪ লাখ মানুষের জন্য বিক্ষিপ্তভাবে ত্রাণ সরবরাহের গতি আরও কমে গেছে এবং অঞ্চলটির প্রধান প্রস্থান পয়েন্ট কার্যকরভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

তবে সপ্তাহান্তে ইসরায়েল জানায়, গাজার সাথে কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ত্রাণ সরবরাহ জোরদার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। ওই হামলায় ১ হাজার ১৮৯ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

জঙ্গিরা ২৫২ জনকে জিম্মি করেছে। জিম্মিদের মধ্যে ১২১ জন গাজায় রয়ে গেছে, যাদের মধ্যে ৩৭ জনকে সেনাবাহিনী মৃত বলে দাবি করেছে।

হামাস পরিচালিত অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় গাজায় অন্তত ৩৬ হাজার ২২৪ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।