বাংলাদেশের বন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন বাঘের একটি প্রধান আবাস স্থল প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমুদ্রজলে অনেক খানি জায়গা জুড়ে গভীর ভাবে জলমগ্স হওয়ায় সেখানকার বন্য প্রাণীর জীবন বিপন্ন হতে পারে আশংকা করা হচ্ছে।
রিমাল নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নভিূমি বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী ভারতে রোববার সন্ধ্যায় আঘাত হানলে দুটি দেশেরই অন্তত ৩৮ জন প্রাণ হারিয়ছেন এবং লক্ষ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার আগেই ১০ লক্ষেরও বেশি লোক উপকুল এলাকা থেকে সরে এসে ঝড়ের পাকা আশ্রয়স্থলে প্রবেশ করেন।
তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত বিশাল সুন্দবনের গরান বনাঞ্চল এই ঝড়ে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বন বিভাগের প্রধান মিহির কুমার দো বলেন,বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক বেঙ্গল টাইগার্স’এর আবাস হচ্ছে এই বনাঞ্চল যা এবার প্লাবিত হয়।
দো এএফপিকে বলেন, “গোটা সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে ৩৬ ঘন্টারও বেশি সময় জলমগ্ন ছিল। সেখানে ১০০’র বেশি মিঠাপানির পুকুরে লবণাক্ত সমুদ্রজল প্রবেশ করে।
সরকারি হিসেবে অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ দিকে কমপক্ষে ১১৪টি বেঙ্গল টাইগারের বাস।
সুন্দরবনের জন্য বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তা্ আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন মিটা পানির খালবিল যদি সামুদ্রিক জলে প্লাবিত হয় তা হলে তিনি বন্য প্রাণীদের জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন ।
হোসেন বলেন , “আমরা উদ্বিগ্ন। এই জলাশয়গুলো গোটা গরান বনাঞ্চলে বিপন্ন বেঙ্গল টাইগারসহ বন্য প্রাণীদের তাজা পানির উত্স ছিল”।
সুন্দরবন হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গরান বনাঞ্চল যেখানে প্রায়শই মৌসুমি ঝড় আঘাত হানে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক ও বাঘ বিশেষজ্ঞ মনিরুল খান বলেন তিনি আশংকা করছেন হরিণের মতো ছোট প্রাণীরাও সমস্যায় পড়তে পারে।
তিনি বলেন, “ আমরা ভয় হচ্ছে সেই সব প্রাণীকে নিয়ে যাদের শরীরে শক্তি কম, যেমন হরিণ , তারা বিপদগ্রস্ত হতে পারে। বেঙ্গল টাইগাররা অন্তত গাছে চড়তে পারে”।