আফগান সীমান্তের কাছে পাকিস্তানি ফাঁড়িতে হামলা, ৫ সৈন্য ও ৭ জঙ্গি নিহত

আফগানিস্তানের মানচিত্র।

সোমবার ভোরে আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে, পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা ফাঁড়িতে সশস্ত্র জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে। এসময়, দুপক্ষের গোলাগুলিতে নিহত হয় পাঁচ সৈন্য ও সাত হামলাকারী।

নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ভয়েস অফ আমেরিকাকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত তিরাহ উপত্যকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছয় সৈন্য আহত হয়েছে বলে জানান তারা।

কয়েক ঘন্টা পর, জঙ্গিদের এই সাবেক শক্ত ঘাঁটিতে সংঘর্ষের খবর নিশ্চিত করে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখা। তারা, সংঘর্ষের ফলে সামরিক বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্যও নিশ্চিত করে। মিডিয়া শাখা আরো বলেছে যে হামলার জবাবে সেনারা গুলি চলালে, সাত জঙ্গি নিহত হয়।

সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখার বিবৃতিতে বলা হয়, “নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।” এই সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনী ও নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলো; বলা হয় বিবৃতিতে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানি তালিবানের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিরা, তিরাহ উপত্যকায় হামলা করেছে বলে দাবি করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। আগে, এই গোষ্ঠীটি তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি বলে পরিচিত ছিলো।

এর আগে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিলো, প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারের কাছে সন্ত্রাসবিরোধী এক অভিযানে দুই পাকিস্তানি সৈন্য ও টিটিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচজন কথিত সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘোষণার একদিন পর এই প্রাণঘাতি হামলা চালানো হলো।

পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী মহসীন নকভি রবিবার আফগানিস্তানের সরকারের প্রতি ইসলামাবাদের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি, প্রতিবেশী দেশ থেকে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানো বন্ধ করতে এবং টিটিপি নেতা ও যোদ্ধাদের অবিলম্বে নিবৃত্ত করতে তালিবান সরকারের প্রতি আহবান জানান।

নকভি এক সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, “টিটিপির সদর দফতর যদি আফগানিস্তানে থাকে” আর, সেগুলোকে বন্ধ করতে যদি কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হয়; তবে কাবুলের ডি-ফ্যাক্টো শাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা ইসলামাবাদের পক্ষে “খুবই কঠিন” হয়ে দাঁড়াবে।

আফগান ভূখণ্ড থেকে টিটিপি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে তালিবান সরকার। তারা বলেছে, প্রতিবেশী দেশগুলো বা তার বাইরের কোনো দেশের প্রতি হুমকি, এমন কাউকে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেয়া হচ্ছে না।

আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালিবান আল-কায়দা সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কটি সে দেশে নতুন প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলেছে; সেই সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত হামলা পরিচালনার জন্য টিটিপিকে সাহায্য করছে; আরো বলা হয় বিবৃতিতে।