যুদ্ধের গত কয়েক মাসের মধ্যে এবারই প্রথম রাজধানী তেল আবিবসহ মধ্য ইসরায়েল জুড়ে সাইরেন বাজিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হামাস গাজা থেকে রকেট নিক্ষেপ করার দাবী করেছে।
যুদ্ধের সাত মাস পার হয়ে গেলেও হামাস গাজার আশেপাশের এলাকাগুলোতে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখলেও দূরপাল্লার রকেট নিক্ষেপ করেনি। সর্বশেষ এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, উত্তর গাজায় লড়াইয়ের সময় এক ইসরায়েলি সেনাকে আটক করার দাবি করেছে হামাস। শনিবার গভীর রাতে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে একজন আহত ব্যক্তিকে একটি সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিষটি সম্পূর্নরুপে অস্বীকার করেছ। হামাস তার দাবির স্বপক্ষে এখন পর্যন্ত অন্য কোনও প্রমাণ সরবরাহ করেনি।
রাফা এড়িয়ে ত্রাণ সরবরাহ
রবিবার আগের দিকে, ত্রাণবাহী ট্রাক দক্ষিণ ইসরায়েল থেকে গাজায় প্রবেশ করে। ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি অংশ দখল করার পর, চলতি মাসের শুরুতে রাফা ক্রসিং এড়াবার নতুন চুক্তির অধীনে ত্রাণ সরবরাহ করা হয়। তবে ওই এলাকায় লড়াই অব্যহ্যত থাকায় দাতব্য সংস্থাগুলো এই ত্রাণ হাতে পাবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
গাজার ২৩ লক্ষ বাসিন্দার প্রায় ৮০ শতাংশ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে, সর্বত্র অনাহার দেখা দিয়েছে এবং জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলছেন ভূখণ্ডের কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ চলছে।
মিশর গাজার দিকের রাফা ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের কাছে হস্তান্তর না করা পর্যন্ত তাদের অংশের ক্রসিং পুনরায় খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দেশটি গাজার প্রধান কার্গো টার্মিনাল দিয়ে সাময়িক ভাবে যান চলাচল করতে সম্মত হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মধ্যে ফোনালাপের পর।
ত্রাণ সংগ্রহ 'বিপজ্জনক'
কিন্তু নিকটবর্তী রাফা শহরে ইসরায়েলি অভিযানের কারণে ওই ক্রসিংটি মূলত প্রবেশের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ইসরায়েল বলছে, তারা শত শত ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, অপর প্রান্ত থেকে ত্রাণ উদ্ধার করা খুবই বিপজ্জনক।
গত ৬ মে ইসরায়েল রাফা ক্রসিং সীমিত করার পর গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ প্রবেশ অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজার অন্যান্য অঞ্চল থেকে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহরটি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
হামাস গত বছর ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে, ইসরায়েলের হিসেব মতে, প্রায় ১,২০০ লোককে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে যাওয়ার পর যুদ্ধের সূচনা হয়। প্রায় ১০০ জীবিত জিম্মি এবং ৩০জনের মরদেহ এখনো হামাসের হাতে আছে। বাকি জিম্মিরা গত বছর এক যুদ্ধ বিরতির সময় মুক্তি পায়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
যুক্তরাষ্ট্র সহ কয়েকটি দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে।