আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া যাবে জুন মাসে, জানালেন অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী

বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি, জুন মাসেই পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ১১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ।

রবিবার (২৬ মে) সচিবালয়ে, আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক ড. কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ান বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর পর অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, যাতে ডলারের প্রবাহ বাড়ানো যায়। অনেক আলোচনা আছে। আমরা আশা করছি, এ সমস্যা সমাধান করতে পারবো। আমরা কাজ করছি।”

“আইএমএফের নির্বাহী পরিচালক জানিয়েছেন, আমরা সঠিক পথে আছি। আমরা যে কাজ করছি, সমস্যা সমাধানে আমাদের কাজের প্রতি তাদের সমর্থন আছে;” আরো জানান অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

জুনে আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া যাচ্ছে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “জুন মাসেই তারা দেবে। সেখানে বাধা কেনো নেই।”

অনাদায়ী ঋণ প্রসঙ্গে আইএমএফ

গত ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে জনস্বার্থে অনাদায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিস্তারিত ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দেয় আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে আইএমএফ ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা ও পরিদর্শন প্রতিবেদন গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত করতে বলে। একই সঙ্গে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঋণ কেলেঙ্কারি রোধে, পরিদর্শনের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দেয়।

সে সময় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বাড়ছে। আর বেশ কয়েকটি ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে ইতোমধ্যেই স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।

তাই সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোতে মানুষের আমানত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছে আইএমএফ। এমন পরিস্থিতিতে, ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গ্রাহকদের সামনে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে এই বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থা।

আইএমএফ কর্মকর্তাদের মতে, এসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গ্রাহক তাদের আমানত রাখার বিষয়ে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

বৈঠকে আইএমএফ ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন অব্যাহত আছে কি না, তা জানতে চেয়েছে। পরিদর্শন প্রতিবেদনগুলো গ্রাহকদের কাছে প্রকাশ করা হয় কি না সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা চাওয়া হয়েছে।

অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঋণ কেলেঙ্কারি রোধে গুণগত মান ও পরিদর্শনের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক চলছে। আগামী ৮ মে পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই বৈঠক চলবে।

এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। বাংলাদেশ মোট সাত কিস্তিতে এই ঋণ পাবে বলে জানিয়েছিলো আইএমএফ।

ঋণ অনুমোদনের প্রতিক্রিয়ায় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, “আমরা অবশ্যই আইএমএফের প্রতি এই ঋণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”