শুক্রবার জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইসরায়েলকে গাজার দক্ষিনাঞ্চলীয় শহর রাফায় অবিলম্বে তাদের সামরিক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আদেশ দেয়নি। ইসরায়েল এই আদেশ মেনে চলার সম্ভাবনা না থাকলেও এই নির্দেশ ক্রমাগতভাবে বিচ্ছিন্ন হতে থাকা দেশটির ওপর চাপ বাড়াবে।
বিশেষ করে রাফায় অভিযানের কারণে গাজার যুদ্ধে ইসরায়েলের আচরণের সমালোচনা বাড়ছে। এমনকি ইসরায়েলের নিকটতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও তাদের সমালোচনা করছে। শুধু এ সপ্তাহেই তিনটি ইউরোপীয় দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘের আরেকটি আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর হামাস কর্মকর্তাসহ ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এই রায় ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক অবস্থানের জন্য আঘাত হলেও আদালতের এ আদেশ কার্যকর করার জন্য কোনো পুলিশ বাহিনী নেই। রাশিয়া এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আগ্রাসন বন্ধে আদালতের ২০২২ সালের আদেশ উপেক্ষা করে যাচ্ছে।
ওদিকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে।
গাজার প্রত্যক্ষদর্শীরা এবং এএফপির সংবাদদাতারা গাজা সিটিতে রাতভর বিমান ও নৌ হামলা এবং দক্ষিণে গোলাগুলির খবর দিয়েছেন। শহরের উত্তর ও কেন্দ্রের আবাসিক ব্লকে দুটি পৃথক হামলায় বেশ কয়েকজনের হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মে মাসের শুরুতে ইসরায়েল গাজার শহর রাফায় হামলা শুরু করে। বিশ্বব্যাপী বিরোধিতা উপেক্ষা করে সেখানে তাদের স্থল সেনারা প্রবেশ করেছিল। এতে আট লাখ মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, গাজায় ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে থাকা নেতানিয়াহু শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ভাষণ দেবেন।
যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের অবিচল মিত্র যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সহিংসতা হ্রাসে নেতানিয়াহুকে ক্রমবর্ধমান চাপ দিতে দেখেছে, ক্রমবর্ধমান বেসামরিক মৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে।
জনসনের মতে, ডানপন্থী ইসরায়েলি নেতার ওয়াশিংটন সফর হবে ‘ইসরায়েলি সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের প্রকাশ।’
বৃহস্পতিবার গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় হামাসের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার দিয়া আল-দিন আল-শারাফা নিহত হয়েছেন।এটি হামাসের পক্ষ থেকে উচ্চপদস্থ কোনো ব্যক্তির প্রাণহানির বিরল স্বীকারোক্তি।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।