বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বাজেট অধিবেশন বসছে আগামী ৫ জুন। সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দীন আহমদ সোমবার(২০ মে) সংসদের তৃতীয় অধিবেশন আহবান করেছেন। এই অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের তৃতীয় সংসদ অধিবেশন আগামী ৫ জুন বিকাল ৫টায় শুরু হবে।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে, ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (বরাদ্দের ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ)। এই এডিপি অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)।
এছাড়া, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের জন্য বরাদ্দ ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা এনইসি অনুমোদন করেছে। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার এডিপি নিয়ে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে মোট এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
এডিপিতে, বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার ১৩৩টি, জরিপ প্রকল্প ২১টি, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ৮৭টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের ৮০টি প্রকল্পসহ মোট প্রকল্পের সংখ্যা এক হাজার ৩২১টি।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে, স্থানীয় সরকার বিভাগ এডিপিতে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা (বরাদ্দের ১৫ শতাংশ) বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে।
গত ৯ মে, ছয় কার্যদিবসের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন
এর আগে সোমবার(১৩ মে) এক বৈঠকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেটে অনুমোদন দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হবে বলে মঙ্গলবার (১৪ মে) নিশ্চিত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী বাজেটে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন শেখ হাসিনা। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মেয়াদের প্রথম বাজেটে নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন দেখতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত করা বাজেটে এর প্রতিফলন ঘটেছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
এছাড়া, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, সতর্কতার সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে, পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অনলাইনে সভায় সংযুক্ত ছিলেন।