বিএনপি নেতা বললেন দেশের অর্থনীতি 'প্রসাধনী দিয়ে সাজানো দুঃস্থ ও পীড়িত নারীর মত'

বিএনপি নেতার প্রশ্নঃ “বাংলাদেশ ব্যাংক কি নিষিদ্ধ স্থান, নাকি সেনানিবাস?” ফাইল ফটো।

বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেছেন, তার ভাষায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের "ব্যাপক লুটপাট, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচারের" কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন 'দুর্বল ও ভঙ্গুর' হয়ে পড়েছে।

“প্রায় ৫০ বিলিয়ন টাকা আত্মসাৎ হয়েছে, যে কারণে রিজার্ভ কমে গেছে। সরকারের মতে, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলার। আসলে রিজার্ভ আছে মাত্র ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার," দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী রবিবার (১৯ মে) বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন।

রিজভী আরো বলেন, এই রিজার্ভও কমে যাবে, কারণ, বিদ্যুৎ খাতে বকেয়া বিল মেটাতে সরকারকে ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে।

“একজন দুঃস্থ ও পীড়িত নারীকে প্রসাধনী দিয়ে সাজালে যেমন দেখাবে, বাংলাদেশের অর্থনীতির চেহারাও তেমন হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি অসুস্থ;” আরো বলেন তিনি।

অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি নেতা বলেন, “শুধু ব্যাংক থেকেই ১২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এটা আমার বক্তব্য নয়, এটা সিপিডির বক্তব্য। আমাদের জিডিপির প্রায় ১২ শতাংশ এভাবে হারিয়ে গেছে। এটা কি কল্পনা করা যায়?”

সিপিডি একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

রিজভী প্রশ্ন করেন, "লুটেরা কারা? এরা সবাই ক্ষমতার ঘনিষ্ঠ মানুষ। তারা হয় আওয়ামী লীগের লোক, নয়তো আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা। তারা প্রচুর ধন-সম্পদ ও অর্থের মালিক।"

'সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢুকতে হবে না', আ্ওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। প্রশ্ন করেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক কি নিষিদ্ধ স্থান, নাকি সেনানিবাস?”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের আমানত রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি সর্বদা জবাবদিহির ক্ষেত্রের মধ্যে থাকা উচিত। সাংবাদিকরা সেখানে যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বক্তব্য

এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা খেই হারিয়ে ফেলছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আগে দেখতাম (বিএনপির) দুই একজন নেতা খেই হারিয়ে ফেলে আবোল-তাবোল কথা বলেন। এখন সিনিয়র নেতারাও খেই হারিয়ে ফেলছেন।”

“তাদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে কোনো লাভ হয়নি। বরং তারা ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন থেকে বাইরে থাকার যে পথ অনুসরণ করছেন, এতে বিএনপির জন্যই আকাশটা ছোট হয়ে আসছে। তারা যদি সেই পথেই থাকে এক সময় হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে;” যোগ করেন হাছান মাহমুদ।