রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেছে। ইউক্রেনকে তাদের সরবরাহ করা দূরপাল্লার রকেট ও অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতিকে “আগুন নিয়ে খেলা” বলে মন্তব্য করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, “আবারও আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে ওয়াশিংটন, লন্ডন, ব্রাসেলস ও অন্যান্য পশ্চিমা রাজধানী এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কিয়েভকে সতর্ক করতে চাই যে, তারা আগুন নিয়ে খেলছে। রাশিয়া তার ভূখণ্ডে এ ধরনের দখলদারিত্ব বিনা জবাবে ছেড়ে দেবে না।”
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনকে নির্দিষ্ট করে কিয়েভকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে তাদের সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত বাড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কার্বি শুক্রবার সংবাদদাতাদের বলেন, বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে উৎসাহিত করে না বা সমর্থন করে না বলে।
আঞ্চলিক গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টেলিগ্রামে, ইউক্রেনের একটি ড্রোনের আঘাতে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় বেলগোরোদ অঞ্চলে সীমান্তবর্তী নোভায়া নোমোভকায় কমপক্ষে একজন নিহত ও একজন আহত হবার খবর দেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে জানায়, ইউক্রেন থেকে আসা ১৪টি মাল্টিপল-লঞ্চ রকেট প্রতিহত ও ধ্বংস করেছে তারা।
রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সেভাস্তোপোল শহরের বৈদ্যুতিক গ্রিডে, আরেকটি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা আঘাত করে। এর কিছু আগে আরেকটি আক্রমণে রাশিয়ার একটি বিমান এবং জ্বালানি গুদামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর আগে শুক্রবার, কৃষ্ণ সাগরের উত্তর-পূর্ব তীরে রাশিয়ার টুয়াপসে শহরের একটি তেল শোধনাগারে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় আগুন ধরে যায়। বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এরপরই তেল শোধনাগারটি জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
যদিও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রসনেফটের মালিকানাধীন তেল শোধনাগারের আগুন পরে নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ রুশ সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর ভভচানস্ক থেকে প্রায় ৮ হাজার বেসামরিক লোককে সরিয়ে নিয়েছে।
সেখানকার আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ সিনিয়েহুবভ শুক্রবার তার টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন, খারকিভে রাশিয়ার বোমা হামলায় কমপক্ষে দু'জন নিহত ও ১৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে, ইউক্রেনীয় সেনার সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে জেলেন্সকি শুক্রবার দুটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এতে বন্দীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে এবং যোগ না দেয়া তালিকাভূক্ত সৈন্যদের চড়া জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া, শনিবার থেকে বিতর্কিত মোবিলাইজেশন আইনও কার্যকর হচ্ছে বলে জানা গেছে। ইউক্রেন সৈন্যদের বাধ্যতামূলক ভর্তির বয়স ২৭ থেকে ২৫ এ নামিয়ে এনেছে। যারা যোগ দেয়া এড়াবে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স এপি এবং এএফপি থেকে নেওয়া ।