আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের কোনো প্রয়োজন নেই; কারণ তাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে।
শনিবার(১৮ মে) রাজধানীর ঢাকার ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
“কোন দেশে অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঢোকা যায়? যে কেউ কি ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে? সব কিছু ওয়েবসাইটে আছে; কেন আপনার প্রবেশ করা দরকার?” পাল্টা সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির সমালোচনা
এদিকে, গত ২৮ এপ্রিল, বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করায়, সরকারের সমালোচনা করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দুর্নীতি ও লুটপাটের বিষয়টি আড়াল করতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।” এক বিক্ষোভ সমাবেশে একথা বলেন তিনি।
“বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা লুট হয়ে গেছে এবং অপরাধীরা আর কেউ নয়, তারা এমপি-মন্ত্রী বা তাদের ঘনিষ্ঠ সহচর;” রিজভী যোগ করেন।
রিজভী আরো বলেন, লুটপাট ও দুর্নীতির তথ্য যাতে প্রকাশ করতে না পারে, সেজন্য সাংবাদিকদের এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছে। কারণ অপরাধীরা সব সময় নিজেদের পাপ ঢাকতে চায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের নিন্দা জানান রুহুল কবির রিজভী।
বিধিনিষেধ ও প্রতিবাদ
গত ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ঘোষণা দেন, “এখন থেকে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে সাংবাদিকদের সুনির্দিষ্ট অনুমতি নিতে হবে। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে সাংবাদিকদের অবাধে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিকদের প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
গত ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর উভয় অংশ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে।এর আগে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়।
অন্যদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে বিধিনিশেষ আরোপ করা, একটি স্বেচ্ছাচারিতার ও গোপনীয়তার নিন্দনীয় উদাহরণ। এ ধরনের পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি। আর, জনস্বার্থে এমন বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছে।