ভারতে মিয়ানমারের শরণার্থীরা আরও গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের আশঙ্কা করছেন

ভারতের নয়াদিল্লিতে বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষ্যে দিল্লিতে বসবাসরত মিয়ানমারের শরণার্থীরা ২০২৩ সালের ২০ জুন ইউএনএইচসিআর কার্যালয়ের বাইরে দাঁড়িয়ে। ফাইল ছবি।

ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে ভারতে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীরা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, তারা ভয় পাচ্ছেন যে মণিপুর রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের পরে তাদের গ্রেপ্তার এবং জোরপূর্বকভাবে মিয়ানমারে ফিরে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ২মে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী নংথোম্বাম বীরেন সিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পেজে ৭৭ জন ‘মিয়ানমারের অবৈধ অভিবাসীকে’ বহিষ্কারের ঘোষণা দেন এবং এটাকে 'প্রথম পর্ব' বলে বর্ণনা করেন।

গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবার মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আরও প্রায় ৫,৪০০ ‘অবৈধ অভিবাসীকে’ বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০২১ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে প্রায় ৬০ হাজার শরণার্থী ভারতে পালিয়ে গেছে।

ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে শরণার্থীদের স্বীকৃতি দেয় না। দেশটি জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেনি।

মণিপুরের শরণার্থীরা বলছেন, সাম্প্রতিক নির্বাসন তাদের আতংকিত করে তুলেছে। সরকারের প্রত্যাশিত ধরপাকড় এড়াতে কেউ কেউ অন্যত্র সরে যেতে শুরু করেছেন।

সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি গোপন স্থান থেকে ফোনে ভয়েস অফ আমেরিকার সাথে কথা বলছিলেন সেইখাং হাওকিপ। তিনি বলেন, “এটিই সেই বিষয় যাকে আমরা ভয় পাই। এ কারণে... আমরা এখানে অন্য একটি সীমান্তবর্তী গ্রামে চলে এসেছি, কারণ আমরা মণিপুর সরকারকে ভয় পাই।”

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা মিয়ানমারের জান্তাকে বেসামরিক নাগরিক ও আটক বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ওপর ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যাসহ ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তারা বলেন, প্রতিরোধের বিরুদ্ধে নির্বিচারে বিমান ও কামানের হামলা পুরো গ্রাম ধ্বংস করে দিয়েছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লড়াইয়ের কারণে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা সাক্ষাৎকার বা মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করলে রাজ্য সরকার এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী কোনো জবাব দেননি।