সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রায় এক মাস পর বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ২৩ জন নাবিক নিয়ে সোমবার (১৩ মে) কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে।
জলদস্যুদের হাতে ৩১ দিন জিম্মি থাকার পর ১৪ এপ্রিল মুক্তি পায় জাহাজটি।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এমভি আবদুল্লাহ কুতুবদিয়া উপকূলে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৪ মে) চট্টগ্রামের সদরঘাট জেটিতে, নাবিকদের তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
মিজানুল ইসলাম আরো জানান, কুতুবদিয়ায় পণ্য খালাসের পর জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
“আমি যতদূর জানি সব নাবিক নিরাপদ ও সুস্থ আছেন এবং এ বিষয়ে অগ্রগতি পরে জানানো হবে;” বলেন মিজানুল ইসলাম।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ৩৩ দিন জিম্মি থাকার পর, গত ২৮ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খালাস করে এমভি আবদুল্লাহ। পরে, বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়।
জল দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় এমভি আবদুল্লাহ প্রাথমিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরে নোঙর করে।
মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাওয়ার পথে, সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে, সোমালি জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৩ এপ্রিল রাত পর্যন্ত তাদের আটকে রাখে জলদস্যুরা।
এর আগে, জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো যে সমঝোতার মাধ্যমে জাহাজ ও নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আর সোমালিয়ার একটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছিলো, ৫০ লাখ ডলার দিয়ে ছাড়া পেয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ যা বলেছিলেন
এদিকে, গত ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশের নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক মুক্ত হয়েছেন।
রাজধানী ঢাকায় তার বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি আরো বলেছেন যে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য তার জানা নেই।
“টাকা-পয়সা কিংবা মুক্তিপণের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগসূত্র নেই। টাকা দিয়ে জাহাজ ছাড়িয়ে আনা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ছবি দেখাচ্ছেন; এ সব ছবির কোনো সত্যতা নেই। ছবিগুলো কোথা থেকে আসছে, কিভাবে আসছে, তা আমরা জানি না; বললেন প্রতিমন্ত্রী খালেদ।
তিনি আরো বলেন যে এমভি আব্দুল্লাহর মুক্তির বিষয়ে, ডিপার্টমেন্ট অফ শিপিং, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা, ইউরোপিয়ান নেভাল ফোর্স, ভারতীয় নৌবাহিনী, সোমালিয়ার পুলিশের সহযোগিতায় হয়েছে।
মুক্তিপণের বিষয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমরা তাদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করেছি দীর্ঘদিন। এখানে মুক্তিপণের কোনো বিষয় নেই।”