গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা এবং রাফাহ শহরে ইসরায়েলের আগ্রাসন “মহাবিপর্যয়” ডেকে আনবে বলে জাতিসংঘের সতর্কতার পর শনিবার আবারও গাজায় ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়।
উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন হামলার খবর জানিয়েছেন এএফপির সাংবাদিকরা। জাতিসংঘ বলছে, এই সপ্তাহে রাফাহতে যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিরোধিতা উপেক্ষা করেছে ইসরায়েলি সেনারা । তারা পূর্ব রাফাহতে প্রবেশ করে সেখানে সহায়তা পাঠানোর দুটি পথ কার্যকরভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর থেকে দেয়া দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইসরায়েল সম্ভবত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। তবে তাদের সরবরাহ বন্ধ করার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ তারা পায়নি এখনো।
রাফাহতে ইসরায়েলের হামলার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বোমা ও গোলা বারুদ চালান আটকে রাখার ব্যাপারে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার দু'দিন পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধে বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর প্রভাব পড়ায় ওয়াশিংটন বারবার সমালোচনা করেছে। এরপর এবারই প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সুবিধার জায়গা, বার্ষিক ৩০০ কোটি ডলারের সামরিক সহযোগিতা নিয়ে তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন বাইডেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, রাফাহতে স্থল অভিযান পূর্ণ মাত্রায় শুরু হলে, গাজা “ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের” ঝুঁকিতে পড়বে।
রাফাহ’র পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরে যাবার নির্দেশ দিয়ে, ইসরায়েলি সেনারা মঙ্গলবার মিশর ও গাজার মধ্যবর্তী রাফাহতে ফিলিস্তিনি দিকটি দখল করে বন্ধ করে দিয়েছে। এই পথে সব জ্বালানি ঐ অঞ্চলে পৌঁছায়।
বুধবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড কেরেম শালোমের সঙ্গে তাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রসিং খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।
তবে শুক্রবার রাতে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ক্রসিং দুটি "ভারী সামরিকীকরণ " করা রয়েছে। এতে জাতিসংঘের ত্রাণ প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, ক্রসিংগুলি বন্ধ হবার অর্থ "কোনও সহায়তা পাঠানো হবে না"।
এএফপি’র মতে ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলয় প্রায় ১,১৭০ জনেরও বেশি লোক মারা যায়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় গাজায় অন্তত ৩৪ হাজার ৯৪৩ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।