ওবায়দুল কাদের: ‘উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ভালো ছিলো বলা যাবে না’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ভালো ছিলো বলা যাবে না। তবে, শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মে) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথসভায় এ কথা বলেন তিনি।

“এবার যে ভোট পড়ছে, খুব ভালো ভোট পড়েছে বলবো না, মোটামুটি পড়েছে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সেখানে কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি;” বলেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির অনেক নেতা দলের ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। বিএনপি প্রকৃতপক্ষে ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে গেছে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।

ইতিবাচক রাজনীতিতে না ফেরা পর্যন্ত বিএনপি কিছুই অর্জন করতে পারবে না; বলেন আওয়ামী রীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়া, বিএনপির শাসনামলে কোনো নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, এই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কৃতিত্ব নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে দিতে হবে।

সিইসি হাবিবুল আউয়াল: উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ৩০-৪০ শতাংশ

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার (৮ মে) বিকেলে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, “প্রকৃত সংখ্যা পরে জানা যাবে। বৃষ্টি ও ফসল কাটা নিয়ে ব্যস্ততার কারণে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে।”

কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিল।”

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভোটাররা আসতে পেরেছেন কি না, ভোট দিতে পেরেছেন কি না, কোথাও কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা দেখাই ইসির কাজ।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে সফল হয়েছি।”

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দেশের ৫৯ জেলার ১৩৯টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৩৯টি উপজেলা পরিষদে প্রতিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ৪১৭টি পদের বিপরীতে প্রায় ৫৭০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট ১ হাজার ৬৩০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ২ কোটি ৮০ লাখের বেশি ভোটার ছিলেন।

উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির

এদিকে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে উপজেলাসহ অন্য কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) হাইকমান্ড।

১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার ও তাঁর আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, বেসামরিক ও পুলিশ প্রশাসন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না।

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ নেই বলে উল্লেখ করে দলটি।

উপজেলা নির্বাচন

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) প্রথম ধাপের ১৫২টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ হয় ৮ মে।

দ্বিতীয় ধাপের ১৬১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ মে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে।

চতুর্থ ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন। চতুর্থ ধাপে ৫৪টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।