পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এতদিন যে ভাষায় কথা বলেছে, সেই একই ভাষায় এবার কানাডাকে সতর্ক করেছে ভারত। প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে কানাডা সরকারকে ভারত সরকার বলেছে, হিংসাকে উৎসবের অঙ্গ করা কিংবা তার মহিমা কীর্তন করা কোনো সভ্য সমাজের কাজ নয়। কানাডার মাটিতে শিখ সন্ত্রাসীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ভারতের বক্তব্য, গণতান্ত্রিক দেশ যারা আইনের শাসনকে মর্যাদা দেয়, তারা কখনই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কট্টরপন্থীদের প্রশ্রয় দেয় না।
এই বিতর্কের সূত্রপাত, কানাডার মালটনে শিখদের নগর কীর্তনে একটি মূকনাট্যকে (ট্যাবলো) কেন্দ্র করে। সেখানে খলিস্তানপন্থীরা শোভাযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কারাগারে শৃঙ্খলে বন্দিদশার প্রতিকৃতি বানিয়ে মুকনাট্য বের করে।
এই ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, কানাডা সরকারের প্রতি অনুরোধ অপরাধী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে নিরাপদ আশ্রয় ও রাজনৈতিক মদত দেওয়া বন্ধ করা হোক।
উল্লেখ্য, খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তিন ভারতীয় যুবককে কয়েক দিন আগেই গ্রেফতার করে কানাডা পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ফার্স্ট ডিগ্রি হত্যার মামলা দায়ের হয়েছে।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আপনারা সকলেই জানেন, আমরা বারবার আমাদের উদ্বেগের কথা কানাডা সরকারকে জানিয়েছি। আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে পুতুল বানিয়ে শোভাযাত্রা বন্ধ করা হোক। কিন্তু, সে দেশের সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জয়সওয়াল বলেন, ২০২৩ সালে ভারতে আততায়ীদের হাতে নিহত এক প্রধানমন্ত্রীর খুন করার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছিল একটি মুকনাট্যে। শুধু তাই নয়, কানাডায় কাজ করা ভারতীয় দূতদের ছবি নিয়ে তারা রাস্তায় বের হয়। এতে তাঁদের প্রাণনাশের ভয় থাকে। তাতেও পদক্ষেপ নেয়নি কানাডা পুলিশ।
তিনি বলেন, আমরা কানাডা সরকারকে জানিয়েছি, ভারতীয় কূটনীতিকেরা যাতে নির্ভয়ে সে দেশে বসবাস ও কাজ করতে এবং তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
এ বছর এপ্রিলের শেষে বৈশাখী উৎসবে শিখদের জমায়েতে ভাষণ দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তাঁর ভাষণ চলাকালেই সমাবেশ থেকে খলিস্তানপন্থী স্লোগান উঠেছিল। তার পরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়াদিল্লিতে নিয়োজিত কানাডার ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করে সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানায়।