১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল শিরোপা এনে দেয়া কোচ সিজার লুইস মেনোত্তি মারা গেছেন। আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এ খবর জানিয়েছে। তবে তারা মেনোত্তির মৃত্যুর কারণ জানায়নি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গুরুতর রক্তশূন্যতা নিয়ে মার্চ মাসে মেনোত্তি একটি ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন।
ফুটবলের প্রতি আবেগ এবং এর খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করার তীক্ষ্ণ ক্ষমতা মেনোত্তির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। তাকে আর্জেন্টিনার ফুটবলের অন্যতম প্রতীকী এবং প্রভাবশালী কোচ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
মেনোত্তি ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী এবং আর্জেন্টিনার কমিউনিস্ট পার্টির সহযোগী সদস্য। তিনি ছিলেন বক্সিং ভক্ত এবং মারিও বেনেদেত্তি, গ্যাব্রিয়েল গর্সিয়া মার্কেজ, হোর্হে লুইস বোর্হেস, মারিও সাবাতো এবং জোয়ান ম্যানুয়েল সেরাতসহ লাতিন আমেরিকান লেখকদের গুণমুগ্ধ।
তিনি রোজারিও সেন্ট্রাল (১৯৬০-১৯৬৩ এবং ১৯৬৭)-এর খেলোয়াড় হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন, এরপর তিনি রেসিং ক্লাব (১৯৬৪) এবং বোকা জুনিয়র্সে (১৯৬৫-১৯৬৬) খেলেন। মেনোত্তি যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্ক জেনারেলদের হয়ে (১৯৬৭), তারপর ব্রাজিলের সান্তোস (১৯৬৮) এবং ইতালির জুভেন্টাস (১৯৬৯-১৯৭০)-এর হয়ে খেলেছেন।
সান্তোসে তিনি পেলের সাথে খেলেছিলেন, যাকে তিনি কিংবদন্তিদের মধ্যে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করতে কখনো দ্বিধা করেননি।
১৯৭৪ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ ছিলেন মেনোত্তি। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপ জয়ের সময় দলটি তার প্রাপ্য স্বীকৃতি পায়নি। কারণ আর্জেন্টিনা তখন ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী সামরিক জান্তা দ্বারা শাসিত ছিল। তার সমালোচকেরা প্রায়ই একটি ছবির কথা মনে করেন, যেখানে বিশ্বকাপ জয়ের পর সামরিক জান্তা প্রধান হোর্হে রাফায়েল ভিদেলার সাথে মেনোত্তি করমর্দন করছিলেন।
বিশ্বকাপের প্রাক্কালে ১৭ বছর বয়সী ম্যারাডোনাকে দল থেকে বাদ দেন মেনোত্তি। কোচ পরে বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্ত বছরের পর বছরে ধরে তাদের সম্পর্ককে তিক্ত করে রেখেছিল।
১৯৯১-৯২ মৌসুমে মেক্সিকোর জাতীয় দলের কোচ ছিলেন মেনোত্তি। তিনি বার্সেলোনারও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন (১৯৮৩-১৯৮৪)। সেখানে তিনি ম্যারাডোনাকে তার দলে রেখেছিলেন। এছাড়া তিনি অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ (১৯৮৭-৮৮); উরুগুয়ের পেনারোল (১৯৯০-৯১); ইতালির সাম্পদরিয়া (১৯৯৭) ও মেক্সিকোর টেকোস (২০০৭)-এর কোচ ছিলেন। মেক্সিকোর টেকোসই তার সর্বশেষ কোচিং।