যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন শুক্রবার রাতে বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি “বিনা বাক্য ব্যয়ে” মেনে নেওয়াটাই হামাসের উচিত হবে। তবে গাজার নেতৃত্বের আড়ালে থাকা জঙ্গিদের উদ্দেশ্য এখনো ঠিক পরিষ্কার নয়।
গাজাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা হামাস ঘোষণা দিয়েছে, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় দীর্ঘদিন ধরে চলা আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য তাদের প্রতিনিধি দল শনিবার কায়রোতে ফিরে আসবে। ইসরায়েলের জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় তাদের আক্রমণ সাময়িকভাবে বন্ধ করার বিষয়টিই আলোচনাতে আসবে।
ব্লিংকেন বলেন, “যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে তারা কি হ্যাঁ বলবে সেই অপেক্ষায় আমরা আছি। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বাস্তবতা হলো গাজার জনগণ ও যুদ্ধবিরতির মাঝে একটামাত্রই নাম, সেটা হামাস।”
অ্যারিজোনায় ম্যাককেইন ইনস্টিটিউটের সেডোনা ফোরামের বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, হামাস ফিলিস্তিনি জনগণের “প্রতিনিধিত্ব করতে চায়” ব্যাপারটা যদি এমন হয় তাহলে তো তাদের যুদ্ধবিরতির গরহন করার কোন যৌক্তিকতা নেই। তবে আমরা সামনের দিনগুলোতে ভাল কিছুই আশা করছি।
হামাস ফিলিস্তিনি জনগণের 'প্রতিনিধিত্ব' করতে চায় উল্লেখ করে ব্লিংকেন বলেন, “যদি এটি সত্য হয়, তাহলে যুদ্ধবিরতি গ্রহণ করা তাদের এতো ভাববার কিছু নেই।” তবে হয়ত আরও কিছু ভাল ঘটছে, সামনের দিনগুলোতে আমরা ভালো কিছুই আশা করছি।
এর আগে সর্বসাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরে ব্লিংকেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ব্লিংকেনের সাথে আলোচনার আগে নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি আলোচনার ফলাফল যাই হোক না কেন রাফায় হামলা চালিয়ে যাবেন বলে অঙ্গীকার করেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সেখানে আক্রমণ চালানোর বিরুদ্ধে তাকে বার বার সতর্ক করছে। গাজার অন্যান্য জায়গা থেকে পালিয়ে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ রাফায় আশ্রয় নিয়েছে।
গাজায় যুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাইডেন প্রশাসনের ওপরও চাপ বাড়ছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় হামাসের হাতে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জন জিম্মির হয়। আগের কিছু সংখ্যক মুক্তি পেলেও আরও প্রায় ১৩০ জন জিম্মি গাজায় রয়ে গেছে। এদের মধ্যে ৩০ জন মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় গাজায় অন্তত ৩৪ হাজার ৬২২ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।