ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন, সুদানের গৃহযুদ্ধ এবং ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধকে বৈশ্বিক মানবাধিকারের অন্যতম প্রধান উদ্বেগ হিসেবে তুলে ধরে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বার্ষিক কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনের আওতাভুক্ত বছর হলো ২০২৩। ২০২৩ সাল জাতিসংঘের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকীও ছিল। ঘোষণাপত্রে বর্ণিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারসহ অন্যান্য চুক্তির ওপর ভিত্তি করে এসব প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের মুখবন্ধে ব্লিংকেন প্রথমে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে মানবাধিকারের উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তিনি নাগরিকদের ওপর সংঘটিত সহিংসতাকে “যুদ্ধের হাতিয়ার” হিসেবে ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “মানবাধিকারের প্রতি ক্রেমলিনের অবজ্ঞা ও অবহেলা পুরোপুরিভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে।”
তিনি সুদানের গৃহযুদ্ধকে মানবাধিকারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, সংঘাতে জড়িত উভয় পক্ষই “ভয়াবহ সহিংসতা, মৃত্যু এবং ধ্বংসযজ্ঞ ছড়িয়ে দিয়েছে।”
ব্লিংকেন বলেন, ইসরায়েল-হামাস সংঘাত মানবাধিকারের জন্য গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং ইসরায়েলকে তার প্রতিক্রিয়ায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করার আহ্বান জানিয়েছে।
ব্লিংকেন ইরানের মানবাধিকারের জন্য হুমকি হিসেবে দেশটির নাগরিকদের, বিশেষ করে নারীদের দমন-পীড়নের বিষয়েও আলোচনা করেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে তালিবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তানে নারী অধিকার দমন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর প্রতি চীনের আচরণ এবং কিউবায় রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর নিপীড়নের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন সত্ত্বেও ‘এই প্রতিবেদনে উৎসাহব্যঞ্জক অগ্রগতিও পাওয়া যেতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন ব্লিংকেন।
ব্লিংকেন এলজিবিটিকিউআই+ অধিকারকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কেনিয়া, জাপান, এস্তোনিয়া এবং স্লোভেনিয়ার অগ্রগতির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারকে এগিয়ে নিতে জর্ডানের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি কাজের অবস্থার উন্নতির জন্য শ্রম সংস্কার প্রণয়নে মেক্সিকোর অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় নিয়ে ব্লিংকেন আলোচনা করেন।