চীনের সাথে উত্তেজনার মধ্যেই ফিলিপাইনকে সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিলো ভারত

ফাইল ছবি - দর্শনার্থীরা গান্ধীনগরে প্রতিরক্ষা এক্সপো ২০২২ এ প্রদর্শিত ভারতের ব্রহ্মা সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের ডামির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ১৮ অক্টোবর, ২০২২।.

দক্ষিণ চীন সাগরে সামুদ্রিক বিরোধ নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ফিলিপাইনে সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ শুরু করেছে ভারত।

ফিলিপাইন, ব্রহ্মা নামের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ২০২২ সালে স্বাক্ষরিত ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তির আওতায় কিনছে।

শুক্রবার এক নির্বাচনী সমাবেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এখন ব্রহ্মা নামের ক্ষেপণাস্ত্র রফতানি করছি। এর প্রথম চালান আজ ফিলিপাইনে যাচ্ছে।”

চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসনে সৃষ্ট উদ্বেগে নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে ভারত ও ফিলিপাইন।

গত বছর ম্যানিলার একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলিতে বেইজিং তাদের ঐতিহাসিক অধিকার দাবী করলে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠে। আর চীনের সাথে হিমালয়ের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকা নিয়ে চার বছর ধরে চলা সামরিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রচেষ্টাও খুব একটা কার্যকর হয়নি ভারতের।

নয়াদিল্লিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেইজিংয়ের আঞ্চলিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রেক্ষাপটেই চীনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ চীন সাগরে বড় আকারের প্রতিরোধে অংশীদার হবার ইচ্ছা রয়েছে ভারতের।

সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড ও অন্যান্য জাহাজ মুখোমুখি হবার পর উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ।

দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটাই নিজেদের বলে দাবি করে চীন। তারা তাদের জলসীমায় টহলের জন্য কোস্টগার্ডের জাহাজ মোতায়েন করেছে। ফিলিপাইন ছাড়াও ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার সঙ্গেও বেইজিংয়ের সামুদ্রিক বিরোধ রয়েছে।

ফিলিপাইনে সরবরাহ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি করেছে ভারত। চুক্তির আওতায়, দেশটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার তিনটি সংস্করণ সরবরাহ করবে বলে নয়াদিল্লির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

ফিলিপাইনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সহকারী মহাপরিচালক জোনাথন মালয়া ম্যানিলায় সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিপাইনের মেরিন সেনারা এসব ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করবে।

এক ইমেইলে ভয়েস অফ আমেরিকাকে ম্যানিলার দে লা সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক স্টাডিজ বিভাগের ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং প্রভাষক ডন ম্যাকলেইন গিল বলেন, “চীনের সাথে তুলনায় ফিলিপাইনের সীমিত সামরিক সম্পদের সাথে এই অস্ত্র প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সাগরে পশ্চিম ফিলিপাইনের সার্বভৌমত্ব ও সার্বভৌমত্বের অধিকারকে উন্নীত করতে উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদার করায় সাহায্য করবে এই ক্ষেপনাস্ত্র।”

গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ম্যানিলা সফর করেন। সেসময় তিনি ফিলিপাইনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখার জন্য ভারতের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি জাহাজও তার সফরকালীন সময়েই ফিলিপাইন সফর করে। বিষয়টিতে, দুই দেশের যৌথ নৌ মহড়া র সুযোগ রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ফিলিপাইনে এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের মধ্য দিয়েই ভারতের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার রফতানি শুরু হলো। বাইরে থেকে এতদিন অস্ত্র আমদানি করলেও, সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তোলার চেষ্টা করছে দেশটি।