রাফায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৬ শিশুসহ নিহত অন্তত ৯ ফিলিস্তিনি

গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বিমানহামলায় আহত এক তরুণ ফিলিস্তিনিকে রাফাহ শরণার্থী শিবিরের কুয়েতি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে (২০ এপ্রিল, ২০২৪)

গাজার সবচেয়ে দক্ষিণে অবস্থিত রাফাহ শহরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমানহামলায় ছয় জন শিশুসহ অন্তত নয় জন মানুষ নিহত হয়েছে। শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। ইতোমধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েল তাদের প্রায় সাত মাসব্যাপী হামলা অব্যাহত রেখেছে।

ইসলামি জঙ্গি সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর আগেই মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক শান্তি পরিস্থিতি ভঙ্গুর ছিল। এই যুদ্ধ শুরুর পর রাতারাতি পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

শুক্রবার দিনের শেষে রাফাহ শহরের পশ্চিম অংশের তেল সুলতান মহল্লার একটি আবাসিক ভবনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা। রাহার আবু ইউসুফ আল-নাজ্জার হাসপাতালের নথি অনুযায়ী, ছয়জন শিশু, দুইজন নারী ও একজন পুরুষের মরদেহ সেখানে নিয়ে আসা হয়েছিল।

হাসপাতালে নিহত শিশুদের আত্মীয়স্বজন সাদা কাপড়ে মোড়ানো মরদেহ জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেন এবং অন্যান্যরা তাদেরকে সান্ত্বনা দেন।

নিহতদের মধ্যে আছেন আবদেল-ফাত্তাহ সোবহি রাদওয়ান, তার স্ত্রী নাজলা আহমেদ আওয়েইদাহ ও তাদের তিন সন্তান। রাদওয়ানের শ্যালক আহমেদ বারহৌম এই তথ্য জানান। বারহৌমের স্ত্রী রাওয়ান রাদওয়ান ও তাদের পাঁচ বছরের মেয়ে আলআও এই হামলায় নিহত হয়েছে। বারহৌম এপিকে শনিবার সকালে বলেন, “এটা এমন এক পৃথিবী, যেখানে কোন ধরনের মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতা নেই।” এ সময় তিনি কাঁদতে কাঁদতে তার মেয়ে আলআর মরদেহকে কোলে নিয়ে দোলাচ্ছিলেন। “তারা বাস্তুচ্যুত পুরুষ, নারী ও শিশুভর্তি একটি বাড়িতে বোমাবর্ষণ করেছে। নারী ও শিশুরাই শুধু শহীদ হয়েছেন (এই হামলায়)”, বলেন তিনি।

মিশরের সীমান্তে অবস্থিত রাফাহ শহরে গাজার মোট ২৩ লাখ মানুষের অর্ধেকের বেশি অবস্থান করছেন। তাদের বেশিরভাগই উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।

সবচেয়ে একনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলি সরকার গত কয়েক মাস ধরে বারবার জোর দিয়ে জানাচ্ছে, তারা এই শহরে স্থল অভিযান চালাতে আগ্রহী। তাদের মতে, সেখানে হামাস জঙ্গিদের অবশিষ্টরা লুকিয়ে আছে।

এখনো এ ধরনের স্থল অভিযান শুরু না হলেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই শহরের ওপর এবং এর আশেপাশে ধারাবাহিকভাবে বিমানহামলা অব্যাহত রেখেছে।