আফগানিস্তানে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করছে তালিবান

একটি মোবাইল ফোনে ফেসবুকের লোগো। ১৪ অক্টোবর, ২০২২। ফাইল ছবি।

গণমাধ্যমে স্বাধীনতার সমর্থকরা আফগানিস্তানে ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ বা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার তালিবানের প্রস্তাব উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং মৌলবাদী শাসকদের এই পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

টেলিযোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী নাজিবুল্লাহ হাক্কানি গত সপ্তাহে স্থানীয় একটি টিভি নিউজ চ্যানেলে ঘোষণা করেন, তিনি তালিবানের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ সীমাবদ্ধ করার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছেন।

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস বা সিপিজে তালিবানকে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যা ‘আফগানিস্তানে তথ্যের প্রবাহকে আরও বাধাগ্রস্ত করবে।’

সোমবার জারি করা এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক এডভোকেট ফর মিডিয়া ফ্রিডম আফগান সংবাদ সংস্থাগুলোর আফগানিস্তানে সংবাদ এবং তথ্য প্রচারের জন্য ফেসবুকের ব্যাপক ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরেছিল।

সিপিজের বিবৃতিতে তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদকে উদ্ধৃত করা হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক নজরদারি গোষ্ঠীকে বলেছেন, “ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হবে না, তবে এর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।”

তালিবান কর্মকর্তারা নিজেরাই নীতিগত বিবৃতি ঘোষণা করতে এবং আফগানিস্তানে তথাকথিত অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা সংক্রান্ত এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রচারের জন্য ফেসবুক এবং এক্স-সহ সামাজিক যোগাযোগ্মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

প্রায় তিন বছর আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর থেকে তালিবান অনেক সাংবাদিককে আটক করেছে, আফগান নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভয়েস অফ আমেরিকাসহ বিদেশী গণমাধ্যম আউটলেটগুলোর প্রবেশগম্যতা সীমিত করেছে। সক্রিয় কর্মীরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা আফগানিস্তানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে খর্ব করেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে কান্দাহার প্রদেশের তালিবান গভর্নর তার কর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীকে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় ছবি বা ভিডিও ধারণের অনুমতি না দিতে নির্দেশ দেন।

ওই মাসের শেষের দিকে প্রমোশন অফ ভার্চু অ্যান্ড প্রিভেনশন অফ ভাইস বিষয়ক মন্ত্রী রাজধানী কাবুলে একটি বৈঠকে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে তারা যদি কঠোর পোশাক নীতি মেনে না চলেন তাহলে নারী সাংবাদিক এবং অতিথিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে। কঠোর পোশাক নীতির অধীনে আফগানিস্তানে সংবাদ সম্প্রচারের সময় নারীদের কেবল চোখ দৃশ্যমান হতে পারবে।