হাওয়াইয়ে সামরিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

ফাইল - চীনের ঝাংজিয়াকৌতে জেন্টিং স্নো পার্কে আমেরিকান এবং চীনা পতাকা উড়ছে। চীনে আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্সের জরিপ অনুযায়ী, বেশিরভাগ আমেরিকান ব্যবসা সেখানে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে।(২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২)

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে প্রায় দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈঠকে মিলিত হন।প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর জাহাজ ও বিমানের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও আগ্রাসী ঘটনা নিয়েই কথা বলা উদ্দেশ্য তাদের ।

তৎকালীন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর , পুনরায় হাওয়াইয়ে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলা এই আলোচনা একটি নতূন সূচনারই ইংগিত দিচ্ছে। তাইওয়ান একটি স্ব-শাসিত দ্বীপরাষ্ট্র হলেও চীন এটিকে নিজের বলে দাবি করে।

এদিকে তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে হস্তক্ষেপ বলে সমালোচনা করেছেন চীনের কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিলিটারি মেরিটাইম কনসালটেটিভ এগ্রিমেন্ট (এমএমসিএ) ওয়ার্কিং গ্রুপ গত কয়েক বছরের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ঘটনাবলী নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। তারা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অপারেশনাল নিরাপত্তা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক একজন আমেরিকান কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির বিমান ও জাহাজের অনিরাপদ আচরন হ্রাসের কারণে আমদের উৎসাহ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের প্রধান আর্মি কর্নেল ইয়ান ফ্রান্সিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “ইন্দো-প্যাসিফিক যেসব অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইন অনুমোদন করা সাপেক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে নিরাপদে ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এবং আমরা এই দায়িত্ব গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। দুর্ঘটনা ও ভুল যোগাযোগ এড়াতে পিএলএ এবং ওই অঞ্চলের অন্য সব সামরিক বাহিনীর সঙ্গে খোলামেলা, সরাসরি ও স্পষ্ট যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এর আগে, সান ফ্রান্সিসকোতে গত নভেম্বরে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন।

এই সপ্তাহের বৈঠকে উভয় পক্ষের প্রায় ১৮ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং তাইওয়ানকে জোরপূর্বক তার অধীনে আনার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। বাইডেন বলেছে, তারা তাইওুয়ানের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবেন। হামলা থেকে তার সেনারা গণতান্ত্রিক এই দ্বীপটিকে রক্ষা করবে।

বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ানকে তার নিয়ন্ত্রণে আনার ইচ্ছা জোরালো ভাবে প্রকাশ করেছে। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকান সেনারা হামলা থেকে গণতান্ত্রিক দ্বীপটিকে রক্ষা করবে।

২০২২ সালের আগস্টে পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরে, চীন তাইওয়ান প্রণালীতে বার বার তার যুদ্ধজাহাজ এবং বিমান নিয়ে দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য তাইওয়ানের চারপাশ থেকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া তাইওয়ান এবং জাপানের পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীন গুলি চালিয়েছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।