তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে লড়ছেন এরদোয়ান

ইস্তাম্বুলের একটি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন একজন নারী। ৩১ মার্চ, ২০২৪।

রবিবার তুর্কিরা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট প্রদান করেছেন। এই নির্বাচনের কেন্দ্রে রয়েছে প্রেসিডেন্ট তাইয়্যেপ এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলুর কাছ থেকে ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা। একরেম ইমামোগলু গত বছরের তিক্ত নির্বাচনে পরাজয়ের পর, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে কাজ করছেন।

ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলু ২০১৯ সাালর নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তার এই বিজয়, দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান এবং তার একে পার্টিকে সবচেয়ে বড় নির্বাচনী ধাক্কা দেয়।

তবে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ২০২৩ সালে তার জাতীয়তাবাদী মিত্রদের সাথে পুনরায় নির্বাচিত হন এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতানিশ্চিত করার মাধ্যমে এর জবাব দেন।

রবিবারের নির্বাচনের ফলাফল নেটো সদস্য তুরস্কের ওপর এরদোয়ানের নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী করে তুলতে পারে; অথবা প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির বিভক্ত রাজনৈতিক দৃশ্যপটে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। ইমামোগলু যদি জয়লাভ করেন, তবে এই বিজয় তার ভবিষ্যৎ জাতীয় নেতা হয়ে উঠার প্রত্যাশায় নতুন আশার সঞ্চার করবে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

এক কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার শহর ইস্তাম্বুল। এই শহর তুরস্কের অর্থনীতিকে পরিচালিত করে। এই শহরের নির্বাচন নিয়ে পরিচালিত জরিপগুলো তীব্র প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

একেপি প্রার্থী হলেন সাবেক মন্ত্রী মুরাত কুরুম। তিনি ইমামোগলুকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন।

ভোটের ফলাফল নির্ধারিত হবে প্রায় ৭০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির প্রভাব এবং কুর্দি ও ইসলামপন্থী ভোটাররা সরকারের পদক্ষেপগুলো কিভাবে পরিমাপ করছে, তার ওপর। কিছু ভোটার বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণে প্রমাণে যথেষ্ট কাজ করেছে।

প্রধান ভূমিকায় কুর্দি ভোটাররা

এরদোয়ানের জন্য প্রধান পুরস্কার হলো ইস্তাম্বুলে জয়লাভ করা।

তবে তিনি রাজধানী আঙ্কারাও ফিরে পেতে চান। দুটি শহরেই, ২০১৯ সালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থীরা জিতেছিলেন। এর আগে, ২৫ বছর ধরে তার একেপি এবং ইসলামপন্থী পূর্বসূরিদের শাসনে ছিলো শহরগুলো।

গত বছরের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর বিরোধী জোটের ভাঙন, এরদোয়ানের বিজয় সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে, ইমামোগলু এখনো তার নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির বাইরে থাকা ভোটারদের কাছে আবেদন করছেন।

ইমামোগলুর ২০১৯ সালের সাফল্যের পিছনে কাজ করেছে প্রধান কুর্দি পন্থী দলের ভোটাররা। কুর্দিদের ডিইএম পার্টি এবার ইস্তাম্বুলে তাদের নিজস্ব প্রার্থী দিয়েছে।

তবে, অনেক কুর্দি, দলীয় আনুগত্যের বাইরে গিয়ে ইমামোগলুকে আবার ভোট দেবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব কুর্দি অঞ্চলে, ডিইএম তাদের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে চাইছে। তথাকথিত জঙ্গিদের সাথে সম্পর্কের কারণ দেখিয়ে, আগের নির্বাচনের পর কুর্দিপন্থী মেয়রদের রাষ্ট্র দ্বারা নিয়োগ করা 'ট্রাস্টি' দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তুরস্কে।

আরো একটি কারণ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে কাজ করছে; তা হলো, গাজা যুদ্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে ইসলামপন্থী নিউ ওয়েলফেয়ার পার্টির সমর্থন বৃদ্ধি। এছাড়া রয়েছে, ইসলামপন্থী একেপি-এর অর্থনীতি পরিচালনার প্রতি মানুষের অসন্তোষ।