মিশরের আল ক্বাহেরা নিউজ টিভি একটি নিরাপত্তা সুত্রকে উল্লেখ করে জানিয়েছে যে রবিবার কায়রোতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে শান্তি আলোচনা আবার শুরু হবে। গাজা ভূখন্ডে প্রায় ছয় মাসের যুদ্ধের পর এটি হবে অস্ত্র বিরতির সর্বসাম্প্রতিক প্রচেষ্টা।
একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন ইসরাইল রবিবার কায়রোতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে। তবে হামাসের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলছেন প্রথমে তারা কায়রোর মধ্যস্থতাকারীদের তাদের আলোচনার ফলাফল জানার জন্য অপেক্ষা করবেন।
যুদ্ধরত পক্ষগুলো কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় আলোচনা তরান্বিত করার চেষ্টা করছে । এই অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবে রয়েছে ছয় সপ্তাহের জন্য ইসরাইলি আক্রমণ স্থগিত রাখা যার বিনিময়ে গাজায় ফিলিস্তিনি জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসের হাতে এখনও আটক ১৩০ জন পণবন্দির মধ্যে ৩০ জনকে মুক্তি দেয়ার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
হামাস বলছে যে কোন চুক্তির লক্ষ্য হতে হবে লড়াইয়ের অবসান ও ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহার। ইসরাইল তা নাকচ করে দিয়ে বলেছে যে তারা শেষ অবধি হামাসের শাসন ও তার সামরিক সক্ষমতাকে খর্ব করার জন্য তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
হামাস এটাও চায় এই যুদ্ধের প্রথম দিকে যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজা সিটি এবং আশ-পাশের এলাকা থেকে দক্ষিণে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের যেন উত্তরে ফিরে আসতে দেয়া হয়। একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন তাঁর দেশে কেবল “কিছু” বাস্তুচ্যূত লোকের ফিরে আসার অনুমতি নিয়ে আলোচনায় রাজি আছে।
গাজা ভূখন্ডের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলের সামরিক আক্রমণে ৩২,০০০ ‘এর ও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।
হামাস জঙ্গিরা সীমান্ত লংঘন করে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলের জনবসতিকে তছনছ করে , ইসরাইলি হিসেবে,১২০০ লোককে হত্যা ও ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে । ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় জানিয়েছে গাজা সিটির প্রধান হাসপাতাল আল শিফা হাসপাতালের চারপাশে যুদ্ধ চলার সময় শুক্রবারও গাজা ভূখন্ডে ইসরাইল বিমানে ও স্থলের মাধ্যমে তাদের বোমা আক্রমণ অব্যাহত রাখে , যার ফলে গত ২৪ ঘন্টায় ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয় ।
মন্ত্রণালয় আরও জানায় যে ঐ হাসপাতালকে নিয়ন্ত্রকারী ইসরাইলি বাহিনী ১০৭ জন রোগীকে পানি, বিদ্যুতইকংবা কোন রকম ওষুধপত্র ছাড়াই মানবসম্পদ বিভাগে বেশ কয়েকদিন ধরে আটক রাখে।
এ দিকে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা বলেছে তাদের যোদ্ধারা মেডিকেল স্থাপনাটির চারপাশে ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলছে তাদের সৈন্যরা আল শিফায় তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ঐ চিকিত্সা স্থাপনার দু’টি ভবনের ভেতর হামাসের তিনজন সশস্ত্র কমান্ডারকে হত্যা করেছে। তারা বরৈছে এই অভিযান চালানোর সময়ে তারা স্নাইপার রাইফেল , এ-কে ফর্টি সেভেন , ম্যাগাজিন ও গ্রেনেড খুঁজে পায়।
ইসরাইল বলছে তাদের অভিযানের সময়ে তারা আল শিফায় শত শত হামাস ও ইসলামিক জিহাদের বন্দুকধারীদের হত্যা এবং আটক করে। হামাস ও হাসপাতালের কর্মচারিরা হাসপাতালের ভেতরে কোন সশস্ত্র ব্যক্তির উপস্থিতির কথা অস্বীকার করেছেন এবং অসামরিক লোকজনকে হত্যা ও গ্রেপ্তার করার জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেন।