জুলিয়ান অসাঞ্জঃ উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ ব্রিটিশ আদালতে পিছিয়ে গেল

লন্ডনের রয়াল কোর্ট অফ জাস্টিস-এর বাইরে অসাঞ্জের সমর্থকরা তাঁর মুক্তি দাবী করেন। ফটোঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪।

মঙ্গলবার একটি ব্রিটিশ আদালত রায় দিয়েছে, জুলিয়ান অসাঞ্জকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ করা যাবে না। উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতার গোপনীয় আমেরিকান নথি প্রকাশের সাইট নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে এটি আংশিক বিজয়।

হাইকোর্টের দুজন বিচারক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহের মধ্যে অসাঞ্জের ভাগ্যে কী ঘটবে সে বিষয়ে আরও নিশ্চয়তা না দিলে তারা অসাঞ্জকে নতুন করে আপিল করার অনুমতি দেবেন।

এই রায়ের অর্থ হচ্ছে, এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা আইনি লড়াই অব্যাহত থাকবে এবং অসাঞ্জ লন্ডনের উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত বেলমার্শ কারাগারে রয়ে যাবেন। তিনি সেখানে গত পাঁচ বছর ধরে কারাবাসে আছেন।

বিচারক ভিক্টোরিয়া শার্প এবং জেরেমি জনসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো আশ্বাস না দেয়, তাহলে তারা অসাঞ্জকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হতে পারে সহ কয়েকটি কারণে প্রত্যর্পনের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেবেন।

তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এসব তথ্য দিলে ২০মে শুনানি হবে।

মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকি

অসাঞ্জের সমর্থকরা বলছেন, তিনি (যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের) প্রথম সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত একজন সাংবাদিক যিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অন্যায়কে উন্মোচন করেছিলেন। অসাঞ্জের কর্মকাণ্ড ছিল জনস্বার্থে করা। তাদের যুক্তি, অসাঞ্জের বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ন্যায্য বিচার পেতে পারেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বলেছে, অসাঞ্জের কর্মকাণ্ড সাংবাদিকতার বাইরে গিয়ে সরকারি গোপন নথি চুরি ও নির্বিচারে প্রকাশ বিস্তৃত। তার কর্মকাণ্ড নিরীহ মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে।

বিচারকরা অসাঞ্জের আপিলের নয়টি যুক্তির মধ্যে ছয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে তারা বলেন, তারা তিনটি বিষয়ে আপিল মঞ্জুর করবেনঃ বাক স্বাধীনতা, অসাঞ্জের দাবি যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন বলে তিনি অসুবিধার মুখোমুখি হয়েছেন এবং আরেকটি হলো মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার ঝুঁকি।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, অসাঞ্জকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে না। তবে বিচারকরা বলেন, “বিদ্যমান আশ্বাসের কোনোকিছুই স্পষ্টভাবেই মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে না।”

অস্ট্রেলিয়ান কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ ৫২ বছর বয়সী অসাঞ্জকে ২০১০ সালে উইকিলিকস-এর ফাঁস করা কয়েক লাখ গোপন নথি প্রকাশের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত করা হয়েছে।