উত্তর কোরিয়া সোমবার বলেছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে সাক্ষাতের প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তারা জোর দিয়ে বলে, প্রায় ২০ বছরের মধ্যে তাদের দেশের প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের সম্ভাবনা নির্ভর করবে টোকিও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচি মেনে নেবে কি না এবং অতীতে জাপানি নাগরিকদের অপহরণ উপেক্ষা করা হবে কি না, তার ওপর।
জাপান স্বীকার করেছে যে তারা একটি দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা করছে। কিন্তু এ ধরনের বৈঠকের জন্য উত্তর কোরিয়ার পূর্বশর্তকে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এটি কিম এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার শিগগিরই যেকোনো সময় শীর্ষ বৈঠক করার সম্ভাবনাকে ম্লান করে দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, কিম যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উপায় হিসেবে জাপানের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করতে চান। অন্যদিকে কিশিদা অপহরণ ইস্যুতে সম্ভাব্য অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে দেশের রাজনীতিতে নিজের অবস্থানের উন্নতি করতে চান। এটি জাপানের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু।
কিমের বোন কিম ইয়ো জং, যিনি নিজেও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এক বিবৃতিতে বলেন, কিশিদা সম্প্রতি একটি অনির্দিষ্ট চ্যানেল ব্যবহার করে তার অবস্থান জানিয়েছেন। কিশিদা জানিয়েছেন, তিনি ‘যত দ্রুত সম্ভব’ কিম জং উনের সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে চান।
কিম ইয়ো জং বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কিশিদা সরকার অপহরণ ইস্যুতে মগ্ন থাকবে এবং উত্তর কোরিয়ার ‘সার্বভৌম অধিকার চর্চায়’ হস্তক্ষেপ করবে ততক্ষণ পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া-জাপান সম্পর্কের কোনো অগ্রগতি হবে না। ধারনা করা হচ্ছে, ‘অধিকার চর্চা’ প্রসঙ্গ উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র পরীক্ষার দিকে ইঙ্গিত করছে।
ফেব্রুয়ারিতে কিম ইয়ো জং একই ধরনের বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া কিশিদাকে পিয়ংইয়ং-এ আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত। তবে এটি কেবল তখনই সম্ভব হবে যখন টোকিও উত্তর কোরিয়ার আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার এবং অপহরণের বিষয়টিকে ইস্যু বানানো বন্ধ করবে।
পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে কিশিদা বলেন, অপহরণ ইস্যু সমাধানে কিমের সাথে বৈঠক ‘গুরুত্বপূর্ণ’। তিনি বলেন, তার সরকার সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠক নিয়ে আলোচনার জন্য বিভিন্ন চ্যানেল ব্যবহার করছে।
সোমবার জাপান সরকারের মুখপাত্র ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেন, উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনায় অপহরণের বিষয়টি বাদ দেয়া ‘গ্রহণযোগ্য নয়।