চীন পরিচালিত পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দর নগরীতে বিদ্রোহীদের মারনাঘাত

ফাইল- পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দরে শ্রমিকরা হাঁটছেন। অক্টোবর ৪,২০১৭।

পাকিস্তানে কর্তৃপক্ষ বুধবার বলেছে ভারি অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত একদল সন্ত্রাসী দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় গোয়াদার শহরে একটি সরকারি ভবনে আচমকা আক্রমণ চালালে ৬ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা কর্মী। গোয়াদার হচ্ছে চীন পরিচালিত বন্দর নগরী।

একজন পদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ভয়েস অফ আমেরিকাকে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করে বলেছেন পাকিস্তানি বাহিনী “দ্রুতই ব্যবস্থা” নেয় এবং প্রচন্ড এক বন্দুযুদ্ধে “ আটজন হামলাকারির সকলকেই” হত্যা করে। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেন।

পরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানায় যে জঙ্গিদের ঐ হামলায় নিহতদের মধ্যে তাদের দু’জন সৈন্যও ছিল। বিবৃতিতে আরও বলা হয় “নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র শস্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়”।

বেআইনি ঘোষিত বালুচ লিবারেশান আর্মি বা বিএলএ গোয়াদার বন্দর কর্তৃপক্ষের ঐ এলাকায় বিকেলে আক্রমণ চালানোর দায় স্বীকার করে। সেখানে অসামরিক ও নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত লোকজনের বাড়িঘর রয়েছে।

সংবাদদাতাদের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই গোষ্ঠীটি, যাদেরকে যুক্তরাষ্ট্র একটি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে অভিহিত করে, দাবি করেছে যে তাদের কথিত আত্মঘাতী স্কোয়াড, দ্য মজিদ ব্রিগেড এই হামলা চালিয়েছে। তারা বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি।

ঐ নিরাপত্তা কর্মকর্তাটি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ আক্রমণের শুরুতে তারা গাড়িতে আনা বোমা ব্যবহার করার চেষ্টা করে কিন্তু সেটা বিস্ফোরিত হয়নি”। তিনি আরও বলেন আক্রমণকারীরা, “ গ্রেনেড, রকেট নিক্ষেপক এবং স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে ভবনটিতে আক্রমণ চালায় কিন্তু পাল্টা গুলিতে তারা নিহত হয়”।

সেখানকার অধিবাসী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় যে বহু বিস্ফোরণ ঘটে এবং তারপর অব্যাহত গোলাগুলি চলতে থাকে।

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বালুচিস্তান প্রদেশে গভীর জলের গোয়াদার বন্দরটি হরমুজ প্রণালীর কাছে অবস্থিত যা কীনা আরব সাগরে তেলবাহী জাহাজ চলাচলের প্রধান পথ।

চীন এই বন্দরটি নির্মাণ করে এবং সরাসরি তা পরিচালনা করে। এটি চায়না –পাকিস্তান ইকনমিক করিডর বা সিপিইসি নামের মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের একটি মূল দিক। এই সিপিইসি হচ্ছে বেইজিং’এর বিশ্বব্যাপী বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়াটিভের একটি বর্ধিত রূপ।

এই দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রমে গত এক দশকে সেখানে চীনের বিনিয়োগ হচ্ছে আড়াই হাজার কোটি ডলার যার মধ্যে রয়েছে গোয়াদারসহ রাস্তাঘাট , বিদ্যুৎ স্থাপনা এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত প্রকল্প।