বিধিনিষেধে উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, বলছে মানবাধিকার সংস্থা

উত্তর কোরিয়ার মানচিত্র

বেসরকারি সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ায় মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে বলছে, মূলত শাসক গোষ্ঠীই এর জন্য দায়ী।

অধিকার গোষ্ঠীটি বলছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘ আরোপিত নিষেধাজ্ঞা চীনের সঙ্গে “ সাধারণ ভাবে আন্ত-সীমান্ত বানিজ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এবং জীবন যাপনের জন্য বেসরকারি বেচাকেনার কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে সাধারণ মানুষের সক্ষমতাকে ক্ষুন্ন করে। সরকার অনুমোদিত কথিত প্রাইভেট বাজার ১৯৯০ ‘এর দশকের শেষ দিক থেকে উত্তর কোরিয়ায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

৭ মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, ২০২০ সালে দেশটির কঠোর করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।

‘আ সেন্স অফ টেরর স্ট্রংগার দ্যান আ বুলেট’ নামের এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত “সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের আরোপিত বিধিনিষেধের ‘বাড়তি কার্যকারিতার’ প্রভাব প্রশমন করা। কারণ (তারা) বৈধ, বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত লেনদেন এবং মানবিক কার্যক্রমকেও আটকে দিচ্ছে।”

প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “ডিপিআরকের (উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম ডেমক্র্যাটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়ার আদ্যাক্ষর ) মানুষের দুর্দশার দায়ভার দেশটির সরকারের ওপর বর্তায়, কারণ তারা মানবিক ও অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের বদলে দুর্লভ সম্পদগুলোকে অবৈধ গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে ব্যয় করছে।”

মুখপাত্রটি ভয়েস অফ আমেরিকার কোরীয় সার্ভিসের কাছে ১৩ মার্চ পাঠানো ইমেইলে আরও জানান: “আমরা ডিপিআরকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ত্রাণ পাঠানোর আন্তর্জাতিক উদ্যোগকে সমর্থন জানাই। আমরা আশা করব, ডিপিআরকে শিগগির আন্তর্জাতিক মানবিক কর্মীদের জন্য তাদের সীমান্ত উন্মুক্ত করবে, যাদের ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগগুলো ডিপিআরকের সীমান্ত আটকে রাখার সিদ্ধান্তের কারণে বাধার মুখে পড়েছে।”

ভয়েস অফ আমেরিকা জাতিসংঘে নিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার মিশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদন বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করলেও সাড়া পায়নি।

তিন বছর আগে মহামারির সময় উত্তর কোরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর আরোপিত বিধিনিষেধের ফলে আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীরা দেশটি ছেড়ে চলে যায়। এরপর এখন পর্যন্ত তাদের সেখানে ফিরে যেতে দেয়া হয়নি। কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে পিয়ংইয়ং কিছু বিদেশী রাষ্ট্রকে দেশটিতে আবারও কূটনৈতিক উপস্থিতি স্থাপন করার সুযোগ দেয়।